Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কম্বল আর মেট্রিসের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে লেপ-তোষক 

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০১৮, ০২:৪৫ PM
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮, ০২:৪৭ PM

bdmorning Image Preview


শীত শীত আমেজের সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন লেপ-তোষক কারিগররা (ধনুকার)। এই কারিগরদের কেউ কেউ আবার পাড়া-মহল্লায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছেন। আবার দোকানে দোকানে অর্ডারের মাধ্যমেও কাজ করছেন। তবে এখন আর আগের মতো সেই কদর পাচ্ছে না লেপ তোষকের। কারণ বাহারি কম্বলে আর মেট্রেসের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে এসব।  

ষড়ঋতুর দেশ এই বাংলাদেশ। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনে প্রকৃতির ধরণ পাল্টে যাচ্ছে। এরপরেও আমাদের দেশে শীত ও বর্ষাকাল ঠিকই আছে। শীতকালে ঠান্ডা আর বর্ষকালে গরম পরাটাই স্বাভাবিক। দিন বদলে শীত এসে কড়া নেড়েছে বেশকিছু আগে থেকেই।  

প্রকৃতির খেয়ালিপনায় হেমন্তেই মিলছে শীতের আমেজ। কখনো কুয়াশার শুভ্র চাঁদরে জানান দিচ্ছে এগিয়ে আসছে শীত। হাড়কাঁপানো না হলেও শীতের আমেজ প্রতিদিনই বাড়ছে একটু একটু করে। দিন যত যাচ্ছে প্রাকৃতিতে তার ছাপ ততোই স্পষ্টতর হয়ে উঠছে।

দিনে রোদের উত্তাপ অনেক কমে গেছে। সন্ধ্যায় একটু গরম কাপড় পরেই বের হতে হচ্ছে। আর রাতে কম্বল বা কাঁথা জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। ভোরে ও সন্ধ্যায় গাছ-গাছালি শোভিত গ্রামবাংলায় পড়ছে ঘন কুয়াশা। হাওয়ায় মিলছে ঠান্ডাভাব। পথের পাশের জংলি গাছপালা, ঝোপঝাড়, মাঠের দূর্বাঘাস সারারাত ঝরেপড়া শিশিরে ভিজে উঠছে।

শহর কিংবা গ্রামাঞ্চল সবখানেই শীতের আমেজ পুরোদমে উপভোগ করছেন মানুষজন। বেড়েছে গরম কাপড়ের কদর। তাই এরই মধ্যে চারিদিকে শুরু হয়ে গেছে পরিবারের লোকজন বাক্সবন্দি করে রাখা লেপ তোষক বের করছে। আবার কেউ নতুনভাবে তৈরি করাচ্ছেন।

মানুষের শরীরের কাপড়ে পরিবর্তন আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লেপ-তোষক কারিগররা (ধুনকর)। তবে আগের মত সেই কদর নেই। এখন প্রায় সবাই কিনছে রঙ-বেরঙের কম্বল। ধুনকরের টুং-টাং আওয়াজ আর বাতাসে উড়ে বেড়ানো তুলা জানিয়ে দিচ্ছে শীত আসছে।

ফলে উপজেলার করেরহাট, বারইয়াহাট, জোরারগঞ্জ, মিঠাছড়া, মীরসরাই সদর, বড়তাকিয়া, আবুতোরাব, হাদিফকিরহাট সহ সব  লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতেও অতিরিক্ত কারিগর কাজ শুরু করতো কিন্তু আগের মতো চাহিদা না থাকায় নিজেরাই কাজ চালিয়ে নিচ্ছে।

সরজমিনে উপজেলার বড়তাকয়িার ধুনকার শাহ আলম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, অন্য মৌসুমে বিভিন্ন রকমের কাজ করলেও শীত আসলে লেপ-তোষক তৈরির কাজে নেমে পড়েন। তবে এখন আগের চেয়ে লেপ -তোষক এর চাহিদা অনেকটাই কম।

লেপ-তোষকের আরেক কারিগর ইসমাইল জানান, এই শীত মৌসুম আসলেই অনেকে লেপ-তোষক তৈরির জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছে। সবকিছু জোগাড় থাকলে প্রত্যেকে প্রতিদিন প্রায় ৪-৬টি লেপ তৈরি করতে পারবে।

আরেক কারিগর আমিন মিয়া জানান, এভাবে ডাবল সাইজের লেপের মজুরী নিচ্ছেন  ৩৫০টাকা আর সিঙ্গেল সাইজের লেপের মজুরী নিচ্ছেন ৩০০ টাকা। তবে লেপ-তোষকের চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেকেই পেশা বদল করছেন।
 

Bootstrap Image Preview