Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ রবিবার, মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কুকুর খাওয়ার দিন শেষ হচ্ছে কোরিয়ানদের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:২০ PM
আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:২০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


আমাদের কম বেশি সবারই কোরিয়ানদের কুকুর খাওয়া নিয়ে আগ্রহ আছে।  আর যদি কেউ কোরিয়া থাকে বা আসতে চায় তাহলে এই কথাটা অবশ্যই শুনতে হবে যে, ‘এই, কোরিয়ানরা নাকি কুকুর খায়!’ এবার তারই প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় কুকুরের কসাইখানা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

ফলে আগামী কয়েকদিনের মাথায় বন্ধ হয়ে যাবে রাজধানী সিউলের দক্ষিণের সিয়ংনাম শহরের সবচেয়ে বড় কসাইখানা খ্যাত তায়েপিয়ং-ডং কমপ্লেক্স। জায়গাটিতে একটি সরকারি পার্ক করা হবে।

বিবিসি জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনের মাথায় রাজধানী সিউলের দক্ষিণের সিয়ংনাম শহরের সবচেয়ে বড় কসাইখানা খ্যাত তায়েপিয়ং-ডং কমপ্লেক্স বন্ধ হয়ে যাবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ কুকুর জবাই করা হয়। তবে এ হত্যাকাণ্ডকে ‘বর্বর’ আখ্যায়িত করে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছিল প্রাণিবাদীরা। একটা সময় ছিল যখন কোরিয়ায় কুকুরের মাংসকে সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার হিসেবে গণ্য করা হতো। তবে এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।

কর্তপক্ষের এ উদ্যোগকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করেছে কোরিয়ার প্রাণি অধিকার গ্রুপ কারা। এক বিবৃতির মাধ্যমে সংগঠনটি বলেছে, কোরিয়ার সবচেয়ে বড় কসাইখানা বন্ধের মাধ্যমে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা অন্যান্য কসাইখানাগুলো বন্ধ করার দুয়ার খুলে গেল। এর মাধ্যমে কুকুরের মাংসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা শিল্পগুলো বিলীন হয়ে যাবে।

তায়েপিয়ং কমপ্লেক্স দেশের সর্বত্র মাংস সরবরাহ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। মুহূর্ত কয়েকশো পশুকে জবাই করতে সক্ষম এমন ছয়টি কসাইখানা রয়েছে কমপ্লেক্সটিতে। হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের (এইচএসআই) অধিকারকর্মীরা অনেক আগে থেকেই প্রচার করে আসছেন, কমপ্লেক্সটির ভেতরের পরিবেশ চরম ‘ভীতিকর’। কমপ্লেক্সের ভেতরে কুকুর জবাই করার বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ছুরি ও পশম অপসারণ মেশিন দেখা গেছে বলে সংগঠনটির অভিযোগ।

নারা কিম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, ‘এটির (তায়েপিয়ং কমপ্লেক্স) জন্য সিয়ংনাম শহরের অনেক বদনাম হতো। তবে এটা বন্ধ হচ্ছে দেখতে পেরে আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি।’

‘দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস শিল্পের বিলুপ্তির জন্য সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত একটি “যুগান্তকারী পদেক্ষপ”। এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া এখন থেকে বহির্বিশ্বে এই বার্তা দিতে সক্ষম হবে যে, কোরিয়দের কাছে কুকুরের মাংসের শিল্প এখন দিন দিন অজনপ্রিয় হয়ে উঠছে’-যোগ করেন এই বাসিন্দা।

প্রতি গ্রীষ্মে তিনটি দিন বিশেষ উৎসব আকারে পালন করা হয়। এই তিনটি দিন কোরীয়রা উচ্চ মসলাসমৃদ্ধ ঝলসানো কুকুরের মাংস খেয়ে থাকেন। তবে দিন দিন এটি জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলছে। এর পরিবর্তে জায়গা করে নিচ্ছে চিকেন স্যুপ।

শুধু তা-ই নয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে কুকুরের মাংসের রেস্টুরেন্ট। এক সময় কোরিয়ায় প্রায় দেড় হাজার রেস্টুরেন্ট ছিল। ২০১৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৭০০-তে। তবে দেশটির জনগণ কুকুরের মাংসের প্রতি অরুচি দেখাতে শুরু করলেও এখন কুকুর পোষার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন বেশি। এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির এক-পঞ্চমাংশ জনগণ পোষা প্রাণি হিসেবে কুকুর পুষতে পছন্দ করেন।

Bootstrap Image Preview