Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গঙ্গাস্নানের মধ্যে দিয়ে শেষ হল ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব 

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৩৮ PM
আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৩৮ PM

bdmorning Image Preview


প্রায় লাখো পুন্যার্থী আর দর্শনার্থীর সমাগমে ধমীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসব মুখর পরিবেশে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পালিত হয়েছে সার্বজনীন রাস উৎসব। গত বুধবার সন্ধ্যায় আরতী, নাম কীর্তনের মাধ্যমে শুরু হয় এ উৎসব।  

আজ শুক্রবার ঊষালগ্নে সমুদ্র সৈকতে গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে সকল ধার্মীয় আনুষ্ঠনিকতা শেষ হলেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসব চলবে আরো ৪দিন। শত বছরের ঐতিহ্য এই রাস মেলা কুয়কাটা ছাড়াও জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার সোনার চরে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রায় দু’শ বছরের ঐতিহ্যবাহি রাস উৎসবকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পূন্যার্থীসহ দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে সাগরকন্যা কুয়াকাটাসহ উৎসব প্রাঙ্গন শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম। হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব হলেও এতে অংশ নেয় সর্বস্তরের লাখো মানুষ। কুয়কাটা সাগর সৈকতে পরিনত হয় সার্বজনীন মিলন মেলায়। রুপ নেয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উৎসবে। জমে উঠে গ্রামীন মেলা।

বুধবার সন্ধ্যা আরতী ও নাম কীর্তনের মাধ্যমে শুরু হয় রাস উৎসবের মুল ধার্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। বৃহস্পতিবার রাতভর পুজার্চনা, হরিনাম সংকৃর্ত্তন, ভক্তিমুলক গানে মেতে ওঠেন দুর-দুরান্ত থেকে আসা ভক্ত পূন্যার্থীরা। পাপ মুক্তির আশায় ধর্মাচরন শেষে শুক্রবার ঊষা লগ্নে ধুপ, দ্বীপ প্রজ্জ্বলন, ধান-দুর্বা ও বেল পাতা সমুদ্র জলে অর্পন করে গঙ্গাস্নানের শেষে ভগবানের যুগল রুপ দর্শন করেন ভক্তরা। 

পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পন করেন অনেকেই। এর মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের  রাসের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও উসব এবং মেলা চলবে আরো ৪ দিন। 

শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম পুরোহিত কালাচাঁদ ঠাকুর বলেন, মহাবতার ভগবান শ্রী কৃষ্ণের সকল লীলার শ্রেষ্ঠ লীলা এ রাস লীলা। গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে পাপ মোচন ও পারমার্থিক কল্যানের জন্য লাখো ভক্ত কুয়াকাটায় এ উৎসবে সমাবেত হন।

শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম’র সাধারন সম্পাদক নিখিল রঞ্জন মন্ডল বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল নিদর্শন এই রাস মেলা উৎসব। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও প্রায় লাখো পূন্যার্থী ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধায় উৎসব ও মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস। কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দিরের সভাপতি ও কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক কাজী আলমগীর, কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোতালেব তালুকদার, কুয়াকাটা পৌর মেয়র আবদুল বারেক মোল্লাসহ প্রশাসেনর বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এসময় বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস বলেন, লাখো পুন্যার্থীর সমাগমের এ সার্বজনীন রাস উৎসব হিন্দুদের ধর্মিয় উৎসব হলেও এতে অংশ নেয় সর্বস্তরের লাখো মানুষ। সাগর সৈকতে পরিনত হয় সার্বজনীন মিলন মেলায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উৎসবে।

পটুয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান বলেন, পূন্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে চার স্তরের খঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, উৎসবে যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তাই জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

Bootstrap Image Preview