Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চুল কেটে, মেকআপ নষ্ট করে এ কেমন প্রতিবাদ দ. কোরিয়ার নারীদের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৪০ PM
আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৪০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কেরিয়ার কিংবা সম্পর্ক, যে কোনও জায়গায় সফল হতে নারীদের সৌন্দর্যই মুখ্য, এমন প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নারীরা। চুল ছোট করে কেটে ফেলে, মেকআপের সরঞ্জাম নষ্ট করে সেই ছবি এবং ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে প্রতিবাদ শুরু করেছেন তারা। প্রতিবাদের নতুন এই ধারার নাম দিয়েছেন ‘এসকেপ দ্য করসেট’।

প্রতিবাদী নারীদের অভিযোগ, নারীদের ক্ষেত্রে নিখুঁত সৌন্দর্যই কেবল মূল্যায়ন করা হয়। ফলে নিজেকে সুন্দর করে তুলতে মেকআপ ব্যবহার করতে বাধ্য হন তারা। ত্বকের যত্ন নিতে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনেক সময় শুধু ত্বক চর্চা কিংবা মেকআপ করার জন্যই ঘণ্টা দুয়েক আগে ঘুম থেকে উঠে পড়তে হয় তাদের।

অভিযোগের আঙুল উঠেছে মেকআপ বিপণন সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধেও। বিবর্ণ নরম ত্বক এবং গোলাপি ঠোঁটেই নারীরা সুন্দর; সৌন্দর্যসামগ্রী বিক্রি করতে সব সময় এ ধরনের বার্তা দেয়া হয়। এমনকি এই সৌন্দর্যের মান বজায় রাখার চাপে অনেক সময় প্লাস্টিক সার্জারি করাতেও পিছুপা হন না অনেকে।

এক পরিসংখ্যান বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন নারী শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই এই অস্ত্রোপচার করেন। এমনকি এ কারণেই সিউলকে বিশ্বের প্লাস্টিক সার্জারির রাজধানীও বলা হয়।

শুধু মুখের সৌন্দর্যই নয়, সমাজের তৈরি করে দেয়া মাপকাঠির মর্যাদা রাখতে নারীদের মাথায় রাখতে হয় আরও বেশ কয়েকটি বিষয়। পাশাপাশি রয়েছে নানা ধরনের নিয়ম-কানুন, বিধি-নিষেধ। চলতি বছরের মে মাসে টেলিভিশনের পর্দায় চশমা পড়ার জন্য বিতর্কের শিরোনামে চলে আসেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি চ্যানেলের একজন সংবাদ উপস্থাপিকা।

তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, ‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজের’ ঠিক করে দেয়া সৌন্দর্যের মাপকাঠি তারা আর মানবেন না। ‘আই অ্যাম নট প্রিটি’ বলে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন জনপ্রিয় ইউটিউবার লিনা বে। ভিডিওর প্রথম অংশে দেখা যাচ্ছে, চড়া মেকআপ করছেন তিনি। পাশে তার সুন্দর মুখের প্রশংসায় রয়েছে নানা কমেন্ট।

তবে ভিডিওটির পরবর্তী অংশে যখন তিনি তার মেকআপ তুলে ফেলছেন তখন আবার একেবারে পাল্টে যাচ্ছে কমেন্টের সুর। উড়ে আসছে ‘আপনার মুখ দেখে আমার ভয় লাগছে’ বা ‘আপনার মতো ত্বক কোনও নারীর হওয়া উচিত নয়!’ জাতীয় নানা মন্তব্য। ভিডিওর শেষে লিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি সুন্দর নই। তবে তাতে আমার আক্ষেপও নেই। তবে মনে রাখবেন, আপনি যেমন তাতেই আপনি স্পেশ্যাল!’ প্রায় ৫০ লক্ষ দর্শক ইতিমধ্যে ভিডিওটি দেখেছেন।

এই প্রতিবাদ বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেশ কয়েক দিন ধরে ‘মলকা’ বা ‘স্পাই ক্যাম পর্ন’র বিরুদ্ধেও প্রচার চালাচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নারীরা। তাদের অভিযোগ, গোপন ক্যামেরায় তুলে নেয়া হচ্ছে ট্রায়াল রুম, জিম কিংবা সুইমিং পুলে নারীদের পোশাক বদলের ছবি। পরে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নানা পর্ন সাইটে।

এখনও পর্যন্ত এ ধরনের প্রায় ছয় হাজার ঘটনা নজরে এসেছে বলে দেশটির গণমাধ্যম বলছে। এ ক্ষেত্রে যারা ছবি তুলছেন এবং ছবিগুলো দেখছেন দু’জনকেই শাস্তি দেয়ার দাবি তুলেছেন প্রতিবাদকারী নারীরা।

Bootstrap Image Preview