Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তথ্য প্রযুক্তির দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ঐহিত্যময় লোকসংস্কৃতি  

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৯ PM
আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৯ PM

bdmorning Image Preview


তথ্য প্রযুক্তির দাপটে ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে ঐহিত্যময় লোক সংস্কৃতি। ধামের গান থেকে শুরু করে গ্রামীণ ঐহিত্যময় খেলাধুলো এখন কেবল বইয়ের পাতায় স্থান করে নেয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে বৈশাখ এলেই লোকজসংস্কৃতি ও আর গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন কিছুটা দেখা মিলে গ্রামে গ্রামে।

এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দু'দশক আগে থেকে হারিয়ে যেতে থাকে আমাদের লোকসংস্কৃতির নানা উপাদান। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ফরিদপুরের লোকসংস্কৃতি  আজ বিলুপ্তির পথে। সামাজিক ও গ্রামীণ উৎসব আর পালা পার্বনে যুবক বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের প্রাণের উচ্ছাস যেন ছড়িয়ে পড়তো। আর আজ তা জায়গা করে নিয়েছে মুঠো ফোনে। দেশীয় সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকে পড়েছে ভার্চুয়াল জগতের সংস্কৃতি। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই খেলার মাঠ ভুলে মুঠো ফোনেই গেইম খেলছে। আর এ কারণেই সামাজিক অবক্ষয় ও তরুণরা মাদকসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করেন বয়জ্যেষ্ঠরা।

রফিকউদ্দিন নামে এক যাত্রা শিল্পী জানান, নতুন প্রজন্ম আমাদের ঐতিহ্যময় লোকসংস্কৃতি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। বিদেশি সাংস্কৃতির প্রভাবে তারা প্রভাবিত হচ্ছে। তাই তারা নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের ঐহিত্যময় লোকসংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। যাতে তারা তা লালন করতে পারে।

কথায় আছে বারো মাসে তেরো পার্বন। আর তাই ফরিদপুরের গ্রাম-গঞ্জে পালা পার্বনে দেখা মিলতো লোক সংস্কৃতির নানা উপাদান। হুলির গান, সত্যপীরের গান, ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতি, বাউল গান, পালাটিয়া গান, যাত্রার আসর বসতো মাঠ ঘাটে। নবান্ন ও বৈশাখী মেলা বসতো। মেলায় থাকতো মৃৎশিল্পের বাহারি দোকান আর সার্কাস খেলা। মাইকিং করে তেমন প্রচার না হলেও এসব আসরে দর্শকের কমতি ছিল না। সব বয়সী নারী-পুরুষ পরিবারের সাথে একসাথে বসে উপভোগ করতো এসব আয়োজন। কিন্তু এখন আর সেই সব আয়োজন চোখে পড়ে না।

আধুনিকতার দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ফরিদপুরের গ্রামীণ খেলাধুলাগুলোও। হা-ডু-ডু, কানামাছি, বৌছি, পাক্ষি খেলা, গোল্লাছুট, ঢাংগুলি, মারবেল, হাঁস খেলা, লাঠি খেলা, রশি টান, ইচিং বিচিং এসব জনপ্রিয় খেলার নাম নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছেই অজানা। দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন জানান, আমরা ফুটবল আর ক্রিকেট খেলি। হা-ডু-ডু খেলার নাম বইয়ে পড়েছি। কখনো খেলিনি। 

স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকরা বলেন, মাঠের খেলা এখন মোবাইলে স্থান করে নিয়েছে। আমাদের গ্রামীণ মজার খেলাধুলাগুলো ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। ঐহিত্যময় এই খেলাধুলা ও সমৃদ্ধ লোকসংস্কৃতিগুলো রক্ষা করতে না পারলে তা কেবল বইয়ের পাতাতেই পড়তে হবে। তাই এসব লোকসংস্কৃতি রক্ষায় সরকারি-বেসরকারিভাবে উদ্যোগের প্রয়োজন।

Bootstrap Image Preview