দুনিয়াতে অনেক রকমের বাজার আছে মাছের বাজার, শাক-সবজির বাজার, বইয়ের বাজার ও পোশাকের বাজার। এসব বাজারের সাথে মানুষ পরিচিত। টাকার বাজারও রয়েছে।তবে টাকার বাজারে নতুন টাকা বিক্রির ব্যাপারটিও অনেকেরই জানা। তবে এবার বাজারে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে নতুন টাকা।
রাস্তার পাশে লাইন দিয়ে বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে লোক বসে আছে। মানুষ তার প্রয়োজনে টাকা কিনছে বাজার থেকে, এমন দৃশ্য কি সত্যি? এমন বিচিত্র বাজার রয়েছে আফ্রিকার ছোট্ট দেশ সোমালিল্যান্ডে। এখানে বিক্রি হয় টাকা। তবে সেই টাকা জাল বা নকল নয়।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, সেখানে বিক্রি হচ্ছে একেবারে আসল টাকা। খোলা রাস্তায় দিন-দুপুরে ক্রেতারা বিনিময় করে নিয়ে যায় রাশি রাশি নোট।
এরকম বাজার গড়ে ওঠার পেছনে সোমালিল্যান্ডের আর্থিক কাঠামোই দায়ী। এখানকার মুদ্রাকে বলা হয় ‘শিলিং’। শিলিংয়ের দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
২০০০ সালে এক ডলারের ছিল ১০ হাজার শিলিংয়ের কাছাকাছি। ২০১৭ সালেও প্রথম দিকে ৯ হাজার শিলিংয়ের সমান ছিল এক ডলার। তাই ডলার বা ইউরোর নিরিখে সামান্য খরচ করলেই পাওয়া যেত কয়েক কেজি নোট! যা নিতে বস্তা বা ঠেলাগাড়ির প্রয়োজন হয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কিনতে গেলেও টাকার বস্তা নিয়ে বের হতে হয় এখানে।
শিলিংয়ের এমন মূল্যহীনতার কারণেই সোমালিল্যান্ডের টাকার গুরুত্ব ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।
টাকার দাম এখানে এতই কম যে, এ টাকার বাজারে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নেই। এমনকি ছিনতাইকারী-চোর-ডাকাতও এই শিলিং চুরি করতে আগ্রহ দেখায়নি। তাই রাস্তার পাশে পথের উপর ফেলে রেখে বিক্রি হলেও কোনও অসুবিধা হয়নি।
ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। সোমালিল্যান্ড দেশটি ‘ডলারাইজড’ হচ্ছে। চালু হয়েছে মোবাইল মানিও। এক বছরেই মোবাইল মানির ব্যবহার ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ।
বর্তমানে এক মার্কিন ডলারের দাম (ভারতীয় মুদ্রায় ৭২.১২ টাকা) ৫৮১ শিলিংয়ের কাছাকাছি। ফলে এখন এই বাজারে ব্যবসা অনেকটাই পড়তির দিকে।