বাংলাদেশ ষড় ঋতুর দেশ। হেমন্ত শেষে এসে পড়েছে শীত। এই শীত মৌসুমে দেশের মধ্যে খেজুর রসের জন্য বিখ্যাত ফরিদপুর অঞ্চল। এরই মধ্যে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় খেঁজুর রস উৎপাদনের জন্যে গাছিরা রস উৎপাদনের কাজ শুরু করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, গট্টি ইউনিয়ন, আটঘর ইউনিয়ন, মাঝারদিয়া ইউনিয়ন,রামকান্তুপুর, সোনাপুর,যদুনন্দী, বল্লভদী, ভাওয়াল এই ৮ টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামে ইতিমধ্যে রস উৎপাদনের জন্য খেঁজুর গাছের মাথার উপরের দিকের এক পাশের অংশ চেঁছে রস বের হওয়ার উপযোগী করে তুলছে গাছিরা। প্রতিদিন একজন গাছি ১৫ থেকে ২০ টি খেঁজুর গাছ ছাঁটাই করছে। গাছ ছাঁটাইয়ের ১৫ দিনের মধ্যে রস উৎপাদন হবে। এই রস দিয়ে উন্নতমানের খেঁজুরের গুড় তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে গাছিরা।
অন্যদিকে খেঁজুরের রস উৎপাদনের পর থেকেই এই এলাকায় প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই জামাই আদরের ধুম পড়ে যায়। পাশাপাশি এই রস ও গুড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরী করা হয়। শুধু তাই নয়,শীতের সকালে কৃষকেরা মাঠে যাওয়ার আগে এক গ্লাস ঠান্ডা রস খেয়ে মাঠে চলে যায়। দুপুরে বাড়িতে এসে আবার মাছ ভাতের পাশাপাশি এই খেঁজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরী বিভিন্ন পিঠা ও মিষ্টি মুখ করেন।
উপজেলার কয়েকজন গাছি জানান, আমাদের এই খেঁজুরের গুড় দিয়ে এলাকার মানুষের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। এতে যে অর্থ আসে তাতে একজনের সংসার ভালভাবে চলে যায়। প্রত্যেকটি গাছির অন্তত এই শীতের মৌসুম অভাব অনাটন থাকে না।
গাছিরা আরও জানান, তিন মাস অর্থাৎ শীতের শুরু থেকে বসন্তের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত গাছ থেকে রস পাওয়া সম্ভব। যদি সেটি নিয়মনুযায়ী পরিচর্যা করা যায়। এ বছরের আবহাওয়া গাছ ও গাছিদেরও অনুকূলে রয়েছে। তাই অন্যন্য বছরের চেয়ে এ্ বছরে অনেক রস উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।