শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গাঁজাসহ ৬ বহিরাগতকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ। পরে তাদেরকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জালালাবাদ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
ক্যাম্পাসের আরেকটি সূত্রে জানা যায়, বহিরাগত ৬ জন ছাড়াও ৬ শাবি শিক্ষার্থীকে গাঁজা কেনাবেচায় সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে প্রশাসন। তবে তাদেরকে শুধুমাত্র সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ জানান, শুক্রবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর টিলারগাও এলাকার গাঁজা যোগানদাতা সোয়াব আলীকে আটক করে প্রক্টরিয়াল বডি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন, শ্রেণির মানুষের কাছে কৌশলে গাঁজা বিক্রি করছিলেন। তিনি এই চক্রের মূল হোতা। নগরীর টিলারগাও এর বড়গুল এলাকার তিতাসা মাজারে তিনি গাঁজা বিক্রি করে থাকেন। তার কাছ থেকে মোট ৩২ পুরিয়া গাঁজা পাওয়া যায়। যা একেকটি গড়ে ২৫ গ্রামের মতো।
এছাড়াও পরে সূত্র ধরে যুগিপাড়া এলাকার মিলন মিয়া, শাবি ক্যাম্পাসের টং দোকানের কর্মচারী মইনুল মিয়া, এইচএসসি পরীক্ষার্থী অর্ঘ্য সরকার, নাজিরগাও এলাকার সালেহ আহমেদ ও পল্লাল আহমেদকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে অর্ঘ্য আহমেদ, পল্লাল সরকার, সালেহ আহমেদকে সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলারও প্রস্তুতি চলছে বলে জানান, প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ।
অন্যদিকে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন শাবি শিক্ষার্থী গাঁজা কিনতে আসেন সোয়াব আলীর কাছে পরে তাদেরকে কৌশলে আটক করে প্রক্টরিয়াল বডি। এরা অনেকেই ক্যাম্পাসের বেশ পরিচিত মুখ। তবে জানা যায়,পরবর্তীতে তাদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সূত্র আরও জানায়, এরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মুরশিদুল মুকারাব্বিন ওরফে ওরিয়ন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সাজিদ মোস্তফা, একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এ এম আবু সাবিত, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রেজা সোয়েব, শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক, বিএমবি বিভাগের আহমদুর রহমান, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহাদ বিন আহমেদ, শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক আরাফাত, পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের খালিদ আল রাফি ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম। এদের অনেকের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায় প্রক্টরিয়াল বডির কাছ থেকে।
প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ আরও জানান, আমরা অনেকদিন ধরেই সোয়াব আলীকে খুঁজছিলাম। আজকে পেয়ে গেছি। বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের বিস্তৃত একটা এলাকায় মাদকদ্রব্য সরবারহ করতো সে। এছাড়া তার সহযোগী আরো কয়েকজনকে প্রশাসনের তৎপরতায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে শাবি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদক মানুষের চিন্তা শক্তিকে বিনষ্ট করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে প্রশাসন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসনকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান তিনি।