নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিভিন্ন জায়গায় খণ্ড খণ্ড গর্তের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার গাড়ী চালকরা। জেলাটির একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক।
এসব মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায় যে, চৈতন্যা, মরজাল, বারিচা, নারায়নপুর, সৃষ্টিঘর, কামারটেক, কোন্দারপাড়া, ইটাখোলা, সাহেবপ্রতাব, শেকেরচর ও মাধবদীসহ প্রতিটি স্টেশনগুলির অভ্যন্তরে খণ্ড খণ্ড ভাঙ্গার কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এদিকে নরসিংদী সড়ক বিভাগের সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি খণ্ড খণ্ড স্থানে ইট দিয়ে ভরাট করলেও হঠাৎই বৃষ্টি নামলে পুনরায় রূপান্তরিত হয় আগের মতো।
সড়ক বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়, এ সমস্ত স্থানগুলো ভরাট করার জন্য একটি বাজেট রয়েছে। তা ছাড়া আজ সোমবার সাহেব প্রতাব এলাকায় এ গর্তগুলো ভরাট করার জন্য কাজ চলছে। কিন্তু জনসাধারণের চলাচল করতে ইতিমধ্যেই সড়ক মন্ত্রণালয়ে একটি বাজেট পাশ হয়েছে এবং আমরা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছি।
সিলেট থেকে ছেড়ে আসা পাথরবাহী ট্রাকের চালক হাতেম উদ্দিন (৬৫) প্রতিবেদককে বলেন, এই জেলায় আমরা ঢুকতেই বিভিন্ন স্থানে খণ্ড খণ্ড ভাঙার কারণে প্রায় আমাদের ট্রাকের চাকা ব্রাস্ট হয়ে যায়। আমরা স্ট্রাটিংয়ে বসে থেকে অনেকটা সময় তিন চাকার ব্যাটারি চালিত গাড়ীকে অভারটেকিং করতে গেলে এ সমস্ত খণ্ডের কারণে আমাদের ট্রাকগুলি প্রায় সময়ই রাস্তার খাদে পড়ে যায়।
এদিকে চৈতন্যা বাজারে পল্ট্রি ব্যবসায়ী মোঃ সাহিনুল হক জানান, আমাদের পল্ট্রির খামারে খাবার আনতে যাওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩ বারই আমাদের মুরগীর খাবারবাহী ট্রাক উল্টে যায়। কিন্তু আমরা নরসিংদী সড়ক বিভাগে প্রায় সময় আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ করলে তারা ইটের ভাঙা ইট দিয়ে গর্তগুলো ভরাট করে। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই পুনরায় গর্তগুলি সৃষ্টি হয়। তাই এখনই এ গর্তগুলি স্থায়ীভাবে ভরাট করে রাস্তার বেহাল অবস্থার নিরসন করার দাবি জানান তিনি।
সম্প্রতি সময়ে এই মহাসড়ক দিয়ে কিশোরগঞ্জ ও সিলেট বিভাগে মানুষেরা চলাচল করে।
সড়ক বিভাগের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সড়কগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ বাজেট থাকলেও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকার কারণে যে নিয়মে কাজ হওয়ার কথা তা না করে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করে। তাই এ সমস্ত ঠিকাদারদের সঠিক নিয়ম মাফিক কাজগুলি তদারকি করা উচিত বলে মনে করেন সড়ক বিশেষজ্ঞরা।
নরসিংদী সড়ক বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, রাজস্ব খাতের বেশির ভাগ অর্থই ব্যয় হয় যথাযথ দরপত্র ছাড়া, রাজনৈতিক ঠিকাদারদের পেছনে। আর উন্নয়ন প্রকল্পেও নয়ছয়ের কারণে যথাযথ ও সময়মতো কাজ হয় না। অব্যবস্থাপনা তো আছেই। সব মিলিয়ে নতুন কিছু সড়ক-সেতুসহ উন্নয়নমূলক কাজ হলেও এর জন্য মানুষকে চরম মূল্য দিতে হয়।
সড়কের দুরবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলেন, ভারী বর্ষার কারণে এবার সড়ক কিছুটা খারাপ। মেরামতের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে, কাজও চলছে। চলতি মাসের মধ্যে সব সড়ক ঠিক হয়ে যাবে।