তুরস্কের মন্ত্রীদের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তুরস্কের বিচারমন্ত্রী আব্দুল্লাহমিত গুল ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলায়মান সুয়েলুর ওপর ওই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল।
তুরস্কে দুই বছর আগে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানচেষ্টা জড়িত থাকার অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মযাজক ব্রান্সনকে গ্রেফতার করা হয়। তুর্কি আদালত তাকে গৃহবন্দি রাখার আদেশ দেয়।
ব্রান্সনকে মুক্তি দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তুরস্ককে অনুরোধ জানানো হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের সেই অনুরোধে মুক্ত হয়নি ব্রান্সন। ফলে ক্ষুব্ধ হয় যুক্তরাষ্ট্র।
বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে গত আগস্ট মাসে তুরস্কের দুই মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এর কয়েক দিন পর তুরস্কের কয়েকটি পণ্যে শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। এতে তুর্কি মুদ্রা 'লিরা'র মূল্য কমতে থাকে।
তবে বেশ কয়েক দিন আগে ব্রান্সনকে মুক্তি দেয় তুরস্ক। এরপর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২ আগস্ট, বৃহস্পতিবার বিবিসির সংবাদে বলা হয়, তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের ওই যাজকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়, যা মার্কিন কর্তৃপক্ষ ভিত্তিহীন দাবি করে তুরস্কের বিচারমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
খবরে বলা হয়, তুরস্কের বিচারমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে।
যুক্তরাষ্ট্র নেটো জোটভুক্ত কোনো মিত্র দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে—এ ধরনের ঘটনা একেবারেই অভূতপূর্ব। কিন্তু তুরস্কের বিচারমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেলায় ঠিক তা-ই ঘটল।
মার্কিন সরকার তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। মার্কিন ভাষ্য মতে, আমেরিকান ধর্মজাযক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে ২০১৬ সাল থেকে আটকে রাখার পেছনে এই দুজন মন্ত্রী মূল ভূমিকা পালন করেছেন।
মি. ব্রানসনের বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযোগ, তিনি কুর্দি বিদ্রোহী দলকে সমর্থন করেন। তুরস্কে সম্প্রতি যে ব্যর্থ অভ্যুত্থান হয়েছে, তার সঙ্গে এই গোষ্ঠী জড়িত বলেও তুরস্ক সরকার মনে করে।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলছেন, এই ‘শত্রুতামূলক পদক্ষেপের’ জবাব দেওয়া হবে।
এরদোয়ান সরকারের সমর্থক কলাম লেখকরা এরই মধ্যে তুরস্কে যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, তা বন্ধ করে দেওয়ার ডাক দিয়েছে।