সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় ক্ষমতা হারাতে পারেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ক্রাউন প্রিন্স পদসহ সরকারের অন্যান্য দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যহতি দেয়া হতে পারে।
তার জায়গায় দায়িত্ব নিতে পারেন সৌদি রাজপরিবারের প্রভাবশালী সদস্য এবং বাদশাহ সালমানের ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদেল আজিজ (৭৫)। ইতিমধ্যে ব্রিটেনে স্বেচ্ছা-নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেকে মনে করেন আহমেদের প্রত্যাবর্তন গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। যুবরাজ মোহাম্মদের জায়গা নিতে পারেন তিনি। বিবিসির বুধবারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের কারণে এখন আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ (এমবিএস নামেও পরিচিত)। সৌদির প্রধান কয়েকটি মিত্রদেশ- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ জাতিসংঘ এবং যেখানে হত্যা সংঘটিত হয়েছে সেই তুরস্কের পক্ষ থেকে চাপ বাড়ছে।
মঙ্গলবার খাসোগি হত্যার নির্দেশদাতাকে শনাক্ত করতে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান। ইস্তাম্বুল সফররত সৌদির প্রধান প্রসিকিউটর শেখ সৌদ আল মুজেবকে আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে বিশেষ কোনো ব্যক্তিকে রক্ষার চেষ্টা না করারও আহ্বান জানান তিনি।
এরদোগান বলেন, ‘হত্যার প্রধান নির্দেশদাতাকে আড়াল ও রক্ষার চেষ্টা চলছে। সত্য আড়াল করার কোনো প্রয়োজন নেই।’ তিনি মূলত যুবরাজের প্রতিই ইঙ্গিত করছেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে যোগ দিতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অনুমতি দেয়ার জন্য সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলেট বলেছেন, খাসোগি এখন কোথায় আছে সৌদি কর্তৃপক্ষকেই সেটা খোলাসা করতে হবে। তার মৃতদেহে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হলে বহু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বলে তিনি মনে করেন।
বিবিসির এক সংবাদদাতা ফ্রাংক গার্ডনার বলছেন, এই খবরটি সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে সৌদি রাজপরিবারের সূত্র থেকেই এবং এ থেকে আভাস পাওয়া যায়, এখন প্রিন্স মোহাম্মদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যক্তিগত স্তরে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। প্রিন্স আহমেদ এতদিন স্বেচ্ছা-নির্বাসনে লন্ডনে অবস্থান করছিলেন।
পশ্চিমা বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, সৌদি রাজপরিবারে তিনি এমন একজন ব্যক্তি যিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদের জায়গা নিতে পারেন। রিয়াদে তার প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে সৌদি কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে কোনো তথ্য নিশ্চিত করেনি।
এরকম কোনো নিশ্চয়তা নাও আসতে পারে। কী শর্তে তিনি ফিরেছেন তাও স্পষ্ট নয়। তবে মনে করা হচ্ছে, নিজের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চয়তা পেয়েই তিনি ফিরেছেন।