পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে ৮ বছর আগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া এক খ্রিস্টান নারীকে বুধবার বেকসুর খালাস করে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দেন। খবর ডন নিউজের।
প্রতিবেশীরা আসিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে নবী মোহাম্মদকে (সাঃ) অপমানের অভিযোগ এনেছিলেন। ওই অভিযোগে ২০১০ সাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ২০১৪ সালে লাহোর হাইকোর্ট নিম্ন কোর্টের রায় বহাল রাখে। পরে বুধবারের রায়ে খালাস পেলেন আসিয়া।
ইসলামাবাদের সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার আসিয়ার আপিলের ৫৬ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শোনান।
মিয়া সাবিক নিসার বলেন, ‘আপিল গৃহীত হয়েছে। নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টের রায় পরিবর্তন করে তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হচ্ছে। তার দণ্ড প্রত্যাহার করা হলো।’
শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন পাঁচ সন্তানের জননী আসিয়া। গত ৮ বছর ধরে তাকে কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে দিন কাটাতে হয়েছে।
আসিয়ার মামলাটি নিয়ে পাকিস্তান গভীর বিভক্তি তৈরি হয়েছিল। দেশটিতে ব্লাসফেমি আইনের পক্ষে শক্ত জনসমর্থন আছে।
২০০৯ সালের জুন মাসে লাহোরের কাছে শেখুপুরা এলাকায় ফল পাড়তে গিয়ে অন্য নারীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চার সন্তানের জননী আসিয়া নবীকে (সাঃ) নিয়ে কটুক্তি করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী আসিয়া একটি কাপ ব্যবহার করে একটি বালতি থেকে পানি খাওয়ার পর, ওই নারীরা পানি অপবিত্র হয়ে গেছে এবং এটি আর ব্যবহার করা যাবে না বললে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। আসিয়া বিবিকে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্যও প্ররোচিত করে তারা। এর পাল্টায় আসিয়া নবীকে নিয়ে তিনটি আপত্তিকর কথা বলেন বলে অভিযোগ ওই নারীদের।
পরে আসিয়াকে তার বাড়িতে মারধরও করা হয়; মারধরের এক পর্যায়ে আসিয়া ব্লাসফেমির স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন বলেও দাবি অভিযোগকারীদের। তদন্তের পর পুলিশ আসিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
আসিয়া পরে জানান, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ‘উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়’ হলেও তিনি কখনোই ধর্ম অবমাননা করেননি; এবং এ নিয়ে কখনো স্বীকারোক্তিও দেননি।