তিনশত টাকা কম দেয়ায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার থেকে ইব্রাহিম হোসেন নামে এক শিশুকে বের করে দেয়া হয়। শিশুটির কাছে ৫শ টাকা দাবি করেন অপারেশন থিয়েটারে অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার রাজীব কওসার। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় তাকে সেখানে থেকে বেডে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলে অপারেশন না করেই দুপুর ১২টায় তাকে বেডে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ইব্রাহিম হোসেন (১২) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের শাখরা বাজার এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন দিন আগে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের জন্য ইব্রাহিম হোসেনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন প্রতিবেশীরা। টাকার অভাবে শিশুটির চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না তার বাবা। ইব্রাহিম হাসপাতালের ৩নং ওয়ার্ডের ২নং বেডে ভর্তি।
শিশুটির বাবা জাকির হোসেন বলেন, আমি গরিব মানুষ। সরকারি খাস জমিতে ছোট একটা ঘর বেঁধে বসবাস করি। নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। গ্রামবাসী মিলে ছেলেটাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
শিশুটির প্রতিবেশী সবুজ গাজী বলেন, গ্রামবাসীর কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে ইব্রাহিমকে অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করি। আমরা যে টাকা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়েছিলাম সেটি ওষুধপত্র ক্রয় করা ও বিভিন্ন পরীক্ষ-নিরীক্ষা করতে গিয়ে শেষ করে হয়ে গেছে। কিন্তু অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার ৫শ টাকা চাইলে দিতে পারেনি। পরে ২শ টাকা জোগাড় করে দিলেও তিনি অপারেশন করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে ইব্রাহিমকে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন।
এদিকে এমন ঘটনা জানার পরই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সাতক্ষীরার নবাগত জেলা প্রশাসক এস এম কামাল হোসেন। তিনি বলেন, শিশুটিকে আজকের মধ্যেই অপারেশনের ব্যবস্থা করার জন্য সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন মো. তাওহিদুর রহমানকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া চিকিৎসা সেবার আপডেট তিনি জানাবেন।
সিভিল সার্জন মো. তাওহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কারণ আমি ট্রেনিংয়ের জন্য ঢাকাতে রয়েছি। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনার পর ইব্রাহিমকে অপারেশনের ব্যবস্থা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে বলা হয়েছে। এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শিশু ইব্রাহিম হোসেনকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়েছে।