Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কৃষকের হাহাকার, ভারত বানাচ্ছে ৩০০০ কোটি টাকার ‘ঐক্যের মূর্তি’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:০১ PM
আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:০৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তিটি তৈরি হয়েছে ভারতে, যার উদ্বোধন বুধবার। ১৮২ মিটার উচ্চতার এ মূর্তিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে শতশত মিলিয়ন ডলার। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই মূর্তিটির নাম ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ বা ‘ঐক্যের মূর্তি’। কিন্তু এ মূর্তি নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে গুজরাতের কৃষকদের মধ্যে।

গুজরাতের পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি এলাকার কৃষক ভিজেন্দ্র তাদবী অনেক দিন ধরেই তার প্রায় তিন একর জমির সেচের পানির জন্য প্রচণ্ড কষ্ট করছেন। অনেক দিন ধরেই মরিচ, ভুট্টা আর বাদাম উৎপাদন করছেন তিনি। ভারতের লাখ লাখ কৃষকের মতো তিনিও চাষাবাদের জন্য মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু দীর্ঘ খরার কারণে তার মতো আরও অনেক কৃষকই তাদের আয় রোজগার নিয়ে সংশয়ে পড়েন বারবার।

এসব কারণে ২০১৫ সালে একবার তাদভী একটি নির্মাণ প্রকল্পে গাড়ি চালকের কাজও নিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য আয় বাড়ানোর। সেটি ছিল গুজরাত সরকারের বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি বানানোর প্রকল্প। যাতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিনশ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা) যার অর্ধেক দেবে গুজরাত সরকার।

এখানেই আপত্তি কৃষক তাদভীরের। তার মতে, বড় মূর্তি বানাতে এত অর্থ ব্যয় না করে সরকারের উচিত এটি কৃষিখাতে ব্যয় করা। ব্রোঞ্জনির্মিত মূর্তি বানানোর কাজ শেষ। তবে তাদভী গাড়িচালক হিসেবেই আরও কাজ পেয়েছেন। কিন্তু তারপরও অসংখ্য কৃষকের মতো চরম অসন্তুষ্ট তিনিও।

প্যাটেল মেমোরিয়ালের আওতায় মূর্তি ছাড়াও সেখানে একটি তিন তারকা হোটেল, একটি জাদুঘর ও একটি গবেষণা কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। আর এসবই হয়েছে যেখানে সেখান থেকে তাদভীর গ্রাম দশ কিলোমিটার দূরে। সেখানে বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র ও উপজাতীয়। সেখানকার বহু মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে।

ভারত সরকারের দাবি, এ উঁচু মূর্তিটিই ওই জেলার অর্থনীতিকে চাঙা করে তুলবে। কারণ তাদের আশা বছরে অন্তত পচিশ লাখ মানুষ মূর্তিটি দেখতে সেখানে যাবে। তবে সরকারের এই যুক্তি মানতে নারাজ স্থানীয়রা।

পানির জন্য বৃষ্টির ওপর নির্ভর করা আরেকজন কৃষক ভোলা তাদভী। তিনিও চান না এ মূর্তি নির্মিত হোক। তিনি বলেন, ‘অন্য জায়গায় যেখানে বছরে তিনবার ফসল হয়, সেখানে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয় একটি মাত্র ফসলের ওপর। এমতাবস্থায় এ মূর্তি নির্মাণ অযৌক্তিক।’

জেলা কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু এসব কথায় মন ভরছে না কৃষকদের বরং চোখের সামনে মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো মূর্তিই তাদের পানি না পাওয়ার অসন্তোষ বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।

Bootstrap Image Preview