মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
গত ৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কতৃক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষককে লাঞ্চিত করার ঘটনায় ৫৬ জন শিক্ষক ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৫ নেতার বিচার চেয়ে পদত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন ৫ জনকে সাময়িক বহিস্কার করলেও তাদের ক্লাস পরীক্ষাসহ কাগজপত্র উত্তোলনের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, বহিস্কৃত ৫ শিক্ষার্থী ক্লাস পরীক্ষা দেবার সুযোগ, হলে থাকার সুযোগ, কাগজপত্র উত্তোলনের সুযোগ, মিছিল মিটিংয়ের সুযোগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সুযোগ সুবিধা তারা ভোগ করছে। এ নিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, সাধারন শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে। সকলেই মনে করেন বহিস্কার করা বা না করার পার্থক্য কোথায়।
গত ১৫ ই অক্টোবর শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্টের কাছ থেকে ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব তালুকদার কোন দেনা পাওনা নেই এই মর্মে স্বাক্ষর নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে তার মাস্টার্সের মার্কসীট ও প্রভেশনাল সার্টিফিকেট উত্তোলন করেছে। সে জিয়াউর রহমান হলে সংযুক্ত হয়েও সে বর্তমানে জোড় পূর্বক বঙ্গবন্ধু হলের ২১৭ নং কক্ষে অবস্থান করছে। এখন সে এ কক্ষে ছাত্রলীগ কতৃক বঙ্গবন্ধু হলের দখল করা হাউজ টিউটরদের কক্ষ থেকে নেয়া শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দকৃত চেয়ার ও বসার সোফা, সুন্দর খাট, দামী টেলিভিশন, ব্যক্তিগত রাউটার, টাকা রখার জন্য স্টিলের সিন্ধুক নিয়ে বিলাসী জীবনযাপন করছে।
এ বিষয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ভারপ্রাপ্ত হল প্রভোস্ট ড. কে. এম. কাদেরী কিবরিয়া বলেন, আমি উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। দেনা পাওনা না থাকলে তারা (প্রসাশন) আমাকে স্বাক্ষর দিতে বলেছেন।
এদিকে বহিস্কৃত ছাত্র ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত বঙ্গবন্ধু হলে থাকার পাশাপাশি ৩১ অক্টোবর আইসিটি বিভাগের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে আই.সি.টি বিভাগের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ অলম মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন বাধা না থাকায় সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
অপর বহিস্কৃত ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমরান মিয়া বঙ্গবন্ধু হলে, যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান হলে ও আদ্রিতা পান্না শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হলে থাকাসহ মিছিল মিটিং করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সাময়িক বহিস্কার থাকা অবস্থায় শুধু ফলাফল স্থগিত থাকবে।
উল্লেখ্য, গত (৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ঈশিতা বিশ্বাস তিশা পূর্ববর্তী সেমিস্টারে পাস না করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে জোড় করে পরীক্ষার সিটে বসিয়ে দেয় সজীব তালুকদার ও তার সহযোগিরা।
এ সময় উক্ত বিভাগের শিক্ষকরা বাধা দিতে গেলে লাঞ্চনার শিকার হন। এ সময় সজীব তালুকদার আঙ্গুল উচিয়ে ও চেয়ারে লাথি মেরে বিভাগের ড. আনোয়ার হোসেনকে বলেন, তুই কার সাথে কথা বলছিস জানিস, আমি ছাত্রলীগের সভাপতি।
এ ঘটনায় ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৫ জনের বহিস্কার না করায় পরদিন ৫৬ শিক্ষক প্রসাশনিক ও একাডেমিক পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার, সহ-সভাপতি মোঃ ইমরান মিয়া ও আদ্রিতা পান্না, যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক জাবির ইকবাল ও ইয়াসিন আরাফাতকে সাময়িক বহিস্কার করে।