সন্তান খারাপ হলেও মা-বাবা তো ভালবাসায় খাদ মেলাতে পারেন না। যে ছেলের ছোট হাত ধরে হাঁটতে শিখিয়েছিলেন বাবা, সেই বাবার গায়েই হাত তুলেছেন সন্তান। কিন্তু মারের পর একমাত্র ছেলের শাস্তি চাওয়া তো দূরের কথা উল্টো ছেলেকে ছাড়াতে আদালতে আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার অশোকনগরের বিল্ডিং মোড় এলাকার ঘটনা এটি।
সামাজিক মাধ্যমে গত কয়েকদিনে ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হয়। বহু মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করছেন সামাজিক মাধ্যমে।
বুধবার ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বৃদ্ধ বাবার জামার কলার ধরে চড় মেরে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। দোষ, স্ত্রীর ডায়াবেটিস থাকা সত্ত্বেও মিষ্টি খাইয়েছেন পিতা মানিকলাল বিশ্বাস। এই কারণেই বাবাকে মারধর করলেন 'গুণধর' ছেলে। ওই ভিডিওটিই ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরই ওঠে প্রতিবাদের ঝড়। পুলিশের কাছেও খবর দেন বহু মানুষ। এরপরই সন্তান প্রদীপ বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা যায়, যে বয়স্ক ব্যক্তিকে মারা হচ্ছে, তাঁর নাম মানিক লাল বিশ্বাস; আর যে মারছে, সেই ছেলের নাম প্রদীপ বিশ্বাস। দুর্গাপুজোর দশমীর পরে নিজের অসুস্থ স্ত্রীকে সামান্য এক টুকরো মিষ্টি মুখে তুলে দিয়েছিলেন মানিকলাল বিশ্বাস। ছেলেকে লুকিয়েই স্ত্রীর মুখে বিজয়ার মিষ্টি তুলে দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটা দেখতে পেয়ে যান ছেলে। তারপরেই বাবাকে মারধর শুরু হয়।
জিনিউজের খবরে বলা হয়, ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস অশোকনগর পৌরসভার কর বিভাগের কর্মী। বৃহস্পতিবার তাঁকে তোলা হয় বারাসত আদালতে। সেখানেই বাবার স্নেহ উপচে পড়ল ছেলের উপরে। আদালতে ছেলের জামিন চাইলেন বাবা। বললেন, একমাত্র ছেলে। ওকে ছাড়া চলবে না। এমনকি ছেলেকে জামিন না দিলে আত্মহত্যার হুমকিও দিলেন। পিতার এমন আর্তনাদের সাড়া দিলেন বিচারক। জামিনে মুক্তি পেলেন প্রদীপ বিশ্বাস।