মধ্যরাতে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে ধরে নেয়ার ১৮ দিন পর নিখোঁজ দুই যুবকের সন্ধান পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বিকালে নাটোর জেলা কারাগারে দেখা মিলেছে তাদের।
নাটোর জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর নাটোরের বাগাতিপাড়া থানায় দায়ের করা (মামলা নং-১৪) একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো এই দুই যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর আদালত চত্বরে নিখোঁজ মাজেদুল মণ্ডলের বাবা বাগাতিপাড়া উপজেলার বেগুনিয়া গ্রামের খোদাবক্স মণ্ডল ও তার বড় ছেলে রেজাউল করিম বলেন, গত ৫ অক্টোবর শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে থাকা ৮-১০ জন লোক মাজেদুল মণ্ডলকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। ‘ওসি স্যার কথা বলবেন’ এমন কথা বলে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে তারা মাজেদুলকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। একই সময় একই এলাকার লিটন ওরফে ডনকেও তুলে নেয় সাদা পোশাকধারী পুলিশ।
এরপর থেকে বাগাতিপাড়া থানা, নাটোরের র্যাব ও ডিবি অফিস এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে ১৮ দিনেও তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। সব অফিস থেকেই মাজেদুল ও লিটনকে আটকের কথা অস্বীকার করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন মাজেদুল মণ্ডলের বাবা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ছেলের খোঁজ না পেয়ে তিনি বাগাতিপাড়া থানায় একটি জিডি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি।
দুই যুবককে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেয়ার ঘটনার পর বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি আতাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মাজেদুলের পরিবারের লোকজন থানায় এসেছিলেন। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।
মঙ্গলবার ঢাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা ঘটনাটি তদন্ত করতে নাটোরে আসেন। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকসহ নাটোর জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার তোফায়েল আহম্মেদের দফতরে যান। চালককে হত্যা করে ভ্যান রিকশা ছিনতাই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে এই দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে তখন তাদেরকে জানানো হয়।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) প্রশান্ত কুমার বলেন, গত ২১ অক্টোবর মালঞ্চি স্টেশন এলাকা থেকে মাজেদুল মণ্ডল ও এর আগে উপজেলার যোগীপাড়া এলাকা থেকে লিটন ওরফে ডনকে আটক করা হয় এবং পরের দিন ২২ অক্টোবর তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাগাতিপাড়া থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।