Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘হিংস্র পশুর মত আমাকে ছিঁড়ে খেত ওরা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক-
প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:৩৭ PM
আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:৩৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


শসস্ত্র সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর কাছে বন্দী থাকা অবস্থায় ধর্ষণ,মারধর ও লাঞ্ছনার মতো নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন লায়লা তালো খুদের আলালি নামে এক নারী। আইএস এর বিভিন্ন শিবিরে দুই বছর আট মাস ছয় দিন জিম্মি করে রাখা হয় তাকে। দীর্ঘ এই সময়টা জুড়ে আইএস সন্ত্রাসীরা তাকে ‘হিংস্র পশুর মতো ছিঁড়ে খেত’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সম্প্রতি মুম্বাইয়ের হারমোনি ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে পুরস্কার নিতে এসেছিলেন লায়লা। সেখানেই নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।

ইরাকের উত্তরাঞ্চলের সিনজার জেলায় পরিবারসহ থাকতেন লায়লা। আইএস এর কাছে আটক হওয়ার দিনের ঘটনা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আগস্টের রৌদ্রোজ্জ্বল দিন ছিল সেটি। প্রতিদিনের মতো সকালে পরিবারে সঙ্গে নাস্তা করছিলাম। অবশ্য তার কয়েক দিন আগে থেকেই আমাদের এখানে বহু অচেনা-অজানা মানুষের আাগোনায় সরগরম ছিল। কারও হাতে পিস্তল, কারও হাতে রাইফেল। মাঝে মধ্য গুলির শব্দ। হঠাৎ করেই এক দিনের মধ্যে সব পাল্টে গেল।

‘ইয়াজিদি নারীদের ধরে ধরে বন্দি করা হচ্ছিল। নির্বিচারে খুন করা হচ্ছিল একের পর এক পরিবারকে। তার মাঝেই স্বামী, দুই সন্তান এবং কয়েকজন আত্মীয়ের সঙ্গে পালাতে সক্ষম হই।’ এ সময় তার পরিবারের ১৯ জন সদস্যকে বন্দী করে খুন করা হয়েছে বলে জানান লায়লা। নিহতদের মধ্যে তার মা, ভাই-বোনরাও ছিল।

জঙ্গিদের হামলায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন যান লায়লা। এর পর চলতে থাকে অমানবিক অত্যাচার। দুই বছর আট মাসের ব্যবধানে তাকে নয় বার কেনাবেচা করে বিভিন্ন দেশের জঙ্গিরা। সিরিয়া, ইরাক, সৌদি আরব, বাগদাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী শিবিরে দিনের পর দিন ধর্ষিতা হয়েছেন লায়লা।

তার কথায়, ‘সপ্তাহখানের বাদেই ওরা বিক্রি করে দিত আমায়। এ ভাবে বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসবাদী শিবিরে হাত বদল হয়েছি। প্রতিদিন আমায় ছিঁড়ে খেত ওরা। তবে আমি সাহস হারাইনি। শুধু সুযোগ খুঁজছিলাম পালানোর। অবশেষে সেই সুযোগ মিলল। কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের পাঠানো বাইকার গ্যাংয়ের সাহায্যে সন্ত্রাসবাদী শিবির থেকে পালাই আমি। তারপর বহু চেষ্টা করে সন্তানদের খুঁজে বার করি। তবে এখনও স্বামী এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদের কোনও খোঁজ পাইনি।’

পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত ছয় হাজার ৪১৭জন ইয়াজিদি নারী আইএস সন্ত্রাসবাদীদের কাছে যৌনদাসী হয়ে বন্দী ছিল। যাদের মধ্যে প্রায় তিন হাজার নারীদের মুক্ত করা গিয়েছে। এখনও প্রায় সাড়ে তিন হাজার বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন।

লায়লার জীবনে এখন একমাত্র লক্ষ্য এদের প্রত্যেককে সন্ত্রাসবাদীদের খপ্পর থেকে মুক্ত করা। লায়লা বলেন, ‘যত দিন একজন নারীও ওদের কাছে বন্দী থাকবে,তত দিন আমরা সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাব তাদের মুক্ত করার। আমি সমস্ত আন্তর্জাতিক শক্তিকে আবেদন করছি,তারা যেন এ কাজে এগিয়ে আসেন।’ টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Bootstrap Image Preview