রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি:
হেলাল উদ্দিনের নিজের জমি নেই। অণ্যের জমি চাষ করে। সেখান থেকে যে শষ্য পায়, তা দিয়ে সংসারের ব্যয়ভার বহন করে। সেই আশায় এবারও চাষ করেছিল রোপা আমন ধান। তার জমির ধান গাছগুলো ভালোভাবেই বেড়ে উঠছিল। কিন্তু ধান গাছ সবুজ থেকে লালবর্ণ ধারণ করতে থাকে। অনেক ধান গাছ পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। প্রায় এক বিঘা জমির ধান গাছের এরকম দুরাবস্থা। এ সমস্যায় জমিতে ওষুধ প্রয়োগ করলেও ধানের কোনো উন্নতি চোখে পড়ছে না।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার মানিকপোটল গ্রামের হেলালের জমিতেই শুধু এ রোগ নয়, একই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অন্যান্য কৃষকের জমির ধান গাছগুলো। ধান গাছের এ রোগের নাম ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (বিএলবি)। স্থানীয় কৃষকের ভাষ্যে এটা পাতাপোড়া রোগ।
চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১৫ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রোপা আমন ধান চাষ করেছে কৃষকেরা। উপজেলার সব এলাকাতেই ধান গাছে কম বেশি এ রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, দূর থেকে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধুই সবুজের সমারোহ। কিন্তু খেতের কাছাকাছি গেলেই ধান গাছের বাস্তব চিত্র চোখে ধরা পড়ে। খেতের পর খেত ধান গাছ পুড়ে লালবর্ণ ধারণ করেছে। কোথাও আবার ধান গাছ পাতামোড়ানো রোগে বিবর্ণ হয়েছে।
এসব রোগে ধান নয় যেন কপাল পুড়ছে চাষিদের। তারপরও ধানের রোগ প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মিলছে না। এছাড়া এসব রোগে কি পরিমান জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে তার পরিসংখ্যান কৃষি অফিসে নেই।
উপজেলার শ্যামগাঁতি গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান বলেন, আমার ৪ বিঘা জমির ধান পাতাপোড়া ও পাতামোড়া রোগে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতি বিঘা জমিতে ধান চাষে এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু সেই জমির ধান রোগে আক্রান্ত হওয়ায় এখন খরচ ওঠাই দায়।
ধুনট উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এসব জমির ধান গাছ ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (বিএলবি) রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে ধানের ফলনে অনেকটাই বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। এই রোগ দমনে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।