রাজধানীর রামপুরায় পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে এক নারীকে হেনস্তা ও ধারণকৃত ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
বুধবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বিবৃতিতে এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে তারা পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, যথাযথ আইনে মামলা গ্রহণসহ তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ শাস্তি এবং নির্যাতনের শিকার নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের দাবিও জানায়।
উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগরীর রামপুরা পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে পুলিশ সদস্য এক নারীকে হেনস্তা ও ধারণকৃত ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মহানগরের পুলিশের একজন সদস্য রাকিব রাজ (ব্যাজে নাম মিজানুর) তার ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে দিয়ে তার পোষ্টে ওই নারী সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেছে। সাড়ে ছয় মিনিটের ভিডিওটিতে দেখা যায় তল্লাশি চৌকিতে একদল পুলিশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা থামানোর পর ওই নারীকে হেনস্তা করে।
ওই নারী বারবারই পুলিশ সদস্যদের তার ব্যাগ তল্লাশির অনুরোধ করেন। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা তার মুখের ওপর আলো ফেলে নানা রকম অপ্রসাঙ্গিক প্রশ্ন ও আপত্তিকর মন্তব্য করতে থাকে।
মহিলা পরিষদের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জনগণের নিরাপত্তা ও আইন শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত কয়েকজন পুলিশ সদস্যদের দ্বারা নারীকে প্রকাশ্যে এভাবে হেনস্তা করায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
বর্তমানে নারীরা কর্মক্ষেত্রে ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা পালন করছে নারীর এই অগ্রযাত্রা অব্যহত রাখার জন্য নারীর স্বাধীন চলাচল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সমাজ, রাষ্ট্র ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
পুলিশ সদস্য কর্তৃক নারীকে হেনস্তা ও ধারণকৃত ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা নারীর মানবাধিকার ও মর্যাদার প্রতি হুমকি স্বরূপ বলে জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
যেখানে রাষ্ট্রের নাগরিক নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর সেখানে ঐ এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী কয়েকজন সদস্যদের দ্বারা এরূপ ঘটনা পুলিশ প্রশাসনের শৃংখলার পরিপন্থি।
নারীর স্বাধীন চলাচল নিশ্চিত করা ও এইরূপ ঘটনার পুনঃরাবৃত্তিরোধে মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশকে আশু কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে এই বিবৃতিতে ।
সেইসাথে মানবিক ও নারীবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জোর দাবি জানানো হয় এবং একইসাথে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিরোধে ব্যক্তি ও নাগরিক সমাজকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।