লক্ষ্মী পূজাকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জের জেলার বিভিন্ হাটবাজার ও বিশেষ স্থানগুলোতে শত বছরের ঐতিহ্য লক্ষ্মী প্রতিমার হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে।
এবিষয়ে পূজা উদযাপন কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দুলাল বিশ্বাস জানান, গোপালগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে শত বছর ধরে কমপক্ষে ৫টিরও বেশি জায়গায় লক্ষ্মী প্রতিমার এ হাট বসে।
প্রতি বছর দুর্গাপূজার বিজয় দশমী পর থেকে সদরের খাটরা কালিবাড়ি, সিলনা হাট, বৌলতলী, গান্ধিয়াশুর, সাতপাড়, সিংগা সাতপাড়, উলপুর, নিজড়া কোটালীপাড়া উপজেলার কালিগঞ্জ, পীড়ারবাড়ী, কান্দি, ধারাবাসাইল, শুয়াগ্রাম, চৌধুরীরহাট, ঘাঘর, কলাবাড়ি, রামশীল, জহরেরকান্দি, ওয়াপদারহাট,নৈয়ারবাড়ি, রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, মনোহর মার্কেট, পশ্চিমপাড়, রাজাপুর, কুশলা, লাখিরপাড়, হিরন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী বাজার, সেনেরচর, বাঁশবাড়িয়া, কুশলির হাট, বর্নি বাজার, গোপালপুর, বালাডাঙ্গা, মৃত্তিডাঙ্গা, পোলসাইর কাশিয়ানি উপজেলার রামদিয়া বাজার, ওড়াকান্দি, রাজপাট, তালতলা, নিজামকান্দি, ঘোনাপাড়ার হাট, কলনা ফেরিঘাটমোড়, জোতকুরা ঘোনাপারা মুকসুদপুর উপজেলার উজানি বাজার, কালিগঞ্জ বাজার, দিকনগর বাজার, বানিয়াচর, জলিলপাড়, রাউথর বাজারসহ আরো অনেক জায়গায় এ সময় লক্ষ্মী প্রতিমার হাট বসে।
এ বছর বুধবার লক্ষ্মী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ সকল হাটে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিমা কেনাবেঁচার ধুম পড়ে। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দেখেশুনে পছন্দের লক্ষ্মী প্রতিমা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ঘরে। জেলার বিভিন্ন স্থানে হাট বসলেও লক্ষ্মী প্রতিমা মূলত কোটালীপাড়ার হিরণ গ্রামে তৈরি হয় বলে স্থানীয় মৃৎ শিল্পী হেমন্ত পাল জানান।
গত চার পুরুষ ধরে এসব হাটে তারা প্রতিমা বিক্রি করে আসছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ অঞ্চলে ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপূজা হয়। ফলে প্রতিটি হাটেই প্রতিমার ক্রেতাদের চাহিদা থাকায় এ সময়টা আমাদের আয়ও বেশি।
প্রতিমা ক্রেতা স্থানীয় শঙ্কর বিশ্বাস বলেন, সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন যে, লক্ষ্মী দেবী তুষ্ট হলে ধন, সম্পদ ও ফসলে ধরণী পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই ঘরে ঘরে এ দেবীর পূজা করা হয়।
আরেক ক্রেতা রতন বাড়ৈ বলেন, লক্ষ্মীপূজা করলে সংসারের অভাব অনটন দূর হয়। পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারি।
একই কথা জানিয়ে হাটে আসা স্বপন মালাকার বলেন, প্রতিমার হাটে প্রচুর প্রতিমা বিক্রি হয়। আমরা বংশ পরমপরায় এসব হাট থেকেই প্রতিমা কিনে আসছি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সরোজ কান্তি বিশ্বাস বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে হাটগুলোতে প্রতিমা বেচাকেনা চলছে। ঐতিহ্যবাহী এ লক্ষ্মী প্রতিমার হাটগুলো আরও শত শত বছর টিকে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।