সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। সৌদি সরকার শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক খাগোসিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। শনিবার (২০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে সৌদির জেনারেল প্রসিকিউটর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দেশটি জানিয়েছে, এ ঘটনায় ১৮জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশটির সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমানের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ প্রখ্যাত সাংবাদিকের মরদেহের হদিস মেলেনি।
সৌদি অ্যাটর্নি জেনালের শেখ সৌদ আল মুজেব বলেন, কনস্যুলেটে ঢোকার পর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মারামারিতে খাসোগির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার মরদেহ কোথায় রাখা হয়েছে তা তিনি বলেননি।
তিনি বলেন, আটকদের মধ্যে ১৫ জনের সঙ্গে খাসোগির মারামারি হয়েছে। এছাড়াও এক চালক ও কনস্যুলেট কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এদিকে তাকে হত্যার দায় নিজের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ জেনারেল আহমেদ আল আসিরির ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
যুবরাজের কাছের লোক আসিরি ও দেশটির গোয়েন্দা বাহিনীর উপ প্রধানকে এরমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিমান বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আসিরি যুবরাজের আস্থাভাজন হওয়ার আগে এক বছরেরও বেশি সময় ইয়েমেন যুদ্ধে তিনি ছিলেন সৌদি মুখপাত্র।
রাষ্ট্রীয় গোপনীয় স্পর্শকাতর তথ্যও তিনি জানতেন বলে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে।
খাসোগি নিহতের ঘটনায় তোলাপাড়ের মধ্যে রিয়াদে আগামী সপ্তাহের বাণিজ্যিক সম্মেলন বয়কটের হিড়িক পড়েছে।
এতে সৌদি আরবে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ঝুঁকি সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনীতিকেও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আগামী ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু তার আগেই সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছেন পশ্চিমা দেশগুলোর মন্ত্রীরা।
তাদের সঙ্গে আরো কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়িক নেতাও সম্মেলন বয়কট করছেন।
খাসোগি নিখোঁজ কিংবা খুনের ঘটনার পেছনে সৌদি আরব জড়িত থাকতে পারে বলে অভিযোগের মুখে দেশগুলো এ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এতে সৌদি আরবে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হওয়া তো দূরের কথা বরং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কই ঝুঁকিতে পড়েছে।