তিব্বতে নদী পথজুড়ে বিশাল পাহাড়ি ধসে আচমকা হড়পা বানে ভেসে যেতে পারে অরুণাচল প্রদেশের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা। চিনের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের কাছ থেকে এই ধসের খবর পাওয়া মাত্রই সতর্কতা জারি করেছে অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সিয়াং জেলা প্রশাসন। তিব্বতের এই ইয়ারলুং সাংপোই অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নামে প্রবাহিত। সিয়াং আরও নীচে নেমে এসে অসমে নাম নিয়েছে ব্রহ্মপুত্র।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অরুণাচল প্রদেশের আপার সিয়াং এবং পূর্ব সিয়াং জেলার মধ্যেদিয়ে প্রবাহিত সিয়াং নদীর জলস্তর গত কয়েকদিনে দুই মিটারেরও বেশি কমে গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, টুটিং-এর কাছে জলস্তর ২ মিটারের বেশি নেমে যায়। তখনই সন্দেহ হয়েছিল নদীর উজান পথে কোথাও বাধার সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার চিনের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের কাছ থেকে রিপোর্ট এসেছে, ধসে নদীর গতিপথ আটকে গিয়েছে।
চিন থেকে পাঠানো রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো নদীর গতিপথ বিশাল পাহাড়ি ধসে আটকে গেছে। এর কারণে আচমকা বিশাল এক হ্রদ তৈরি হয়েছে। প্রায় ১৩০ ফুট উঁচু হয়ে পানি জমে রয়েছে সেখানে।
অরুণাচল প্রদেশের বিধায়ক নিনং এরিং বলেন, নদীর দুই পারে গ্রামগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। তারা যেন নদীর কাছে না আসেন এ বিষয়ে তাদের বলা হয়েছে।
এ ছাড়া ধসের ওই আলগা দেওয়াল যে কোনও সময় ভেঙে যেতে পারে। সেই সময় বিশাল জলরাশি ধেয়ে আসবে নীচের দিকে। সেই বিপদের আশঙ্কাতেই ইয়ারলুং ছাংপো নদীর দুই তীর এবং আশপাশের প্রায় ৬ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে তিব্বতের স্থানীয় প্রশাসন। নদী সংলগ্ন এলাকায় যাতায়াতের উপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
জানা যায়, এ ঘটনা শুরু হয় গত বুধবার সকালে। ভারত-চিন সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে লিংজি নামক একটি জায়গায় ইয়ারলুং সাংপোর গতিপথে হঠাৎ করেই ধস নামে। পাহাড়ি উপত্যকার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর মাঝখানে ধসে পড়ে পাহাড়ের একাংশ।
মূলত সেই ধসে নদীর গতিপথে একটা বাঁধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে নদীর জল পুরোপুরি আটকে নীচের দিকে নামা বন্ধ হয়ে যায়। গতিপথের পিছন দিকটা সুবিশাল হ্রদের আকার নিয়ে নেয়। আর হ্রদের নীচের দিকে অর্থাৎ যেখানে ধস নেমেছে তার পরবর্তী অংশে নদী শুকিয়ে গেছে।
চিনের এমার্জেন্সি সার্ভিসেস জানিয়েছে, উপর থেকে জল নামছে। জল নদীপথ ধরে নীচে নামতে পারছে না। ফলে ক্রমেই বাড়ছে ওই হ্রদের জলস্তর। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই লেকের জলস্তর দাঁড়িয়েছে ৪০ মিটার বা ১৩০ ফুটেরও বেশি।