Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রানীশংকৈলে ভাটার জ্বালানী হিসেবে মজুদ করা হচ্ছে কাঠ খড়ি  

খুরশিদ আলম শাওন, রানীশংকৈল (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:১৩ PM
আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:১৩ PM

bdmorning Image Preview


গাছ পৃথিবীর মানুষকে অক্সিজেন নিতে সাহায্যে করে। তাই আমাদের দেশে বেশি বেশি করে গাছ লাগানোর জন্য সরকার পক্ষ থেকেও বিভিন্ন কমসূচি গ্রহণ করা হয়েছে মানুষকে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে উদ্যোগী করে তোলার জন্য। অথচ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই সেই গাছ কেটেই ঠাকুরগাও'য়ের রানীশংকৈল উপজেলায় ইট ভাটায় জ্বালানোর লক্ষে হাজার হাজার মেট্রিক টন কাঠ খড়ি মজুদ করা হচ্ছে।

গত কয়েকদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ইট ভাটাগুলোতে ঘুরে এমনি চিত্র দেখা গেছে। রানীশংকৈলে মোট কতটি ইট ভাটা রয়েছে তার সঠিক হিসাব নেই। তবে নতুন পুরাতন মিলে ২০ এর অধিক বলে জানা যায়। 

ইট পোড়ানো কাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিক জানান, নিয়মনুযায়ী কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর নির্দেশ থাকলেও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কিংবা ফাঁকি দিয়ে মূলত ভাটায় কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হয়।

তারা জানান, একটি বড় ইটভাটায় প্রতি দফায় প্রায় ৪ লাখের অধিক ইট পোড়াতে সময় লাগে মাস খানেক। এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ মণ কাঠ খড়ি ভাটায় জ্বালানী হিসেবে পোড়ানো হয়। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ মণ কাঠ খড়ি জ্বালানী হিসেবে ১ম দফায় প্রয়োজন হয় প্রায় ১০ হাজার মণ কাঠ। সে হিসেবে বিশের অধিক ভাটায় ১ম দফা ভনী হিসেবে কাঠ খড়ি পোড়ানো হবে প্রায় ২ লাখ মণ।

মৌসুমে ৭ দফা কাঠ পোড়াতে হলে প্রতিটি ভাটায় লাগবে ১৪ লাখ মণ কাঠ খড়ি। চলতি বছরের নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত চলবে ভাটায় ইট পোড়ানোর হিড়িক।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানী হিসেবে কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বলা আছে আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাই কিছুই থাকুক না কেন কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানী হিসেবে কোন কাঠ ব্যবহার করিতে পারিবে না। যদি কোন ব্যক্তি এই ধারা লঙ্ঘন করে ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানী হিসেবে কাঠ ব্যবহার করেন তাহলে তিনি অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক তিন লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দন্ডিত হবে।

পৌরশহরের চাদনী সিনেমা হলের বিপরীত আব্দুর রশিদের সো মিলে শত শত মণ গাছের কাঠ ভাটায় পোড়ানোর জন্য প্রস্তুত করে কাঠের বিশাল ঝাঁক দেওয়া হয়েছে। আব্দুর রশিদ নিজেই ভাটার মালিক তার সো মিলে বর্তমানে তিনি ভাটায় কাঠ পোড়ানোর জন্যই কাঠ মাড়াই করে নিচ্ছেন।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) আব্দুর রশিদের ভাই ইকবালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ভাটার জন্য খড়ি মজুদ করা হচ্ছে স্বীকার করে বলেন, সরকারকে টেক্স দেয় সরকার জানে ভাটায় কতগুলো খড়ি লাগে। খড়ির সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চাইলে তিনি তার বড় ভাই আব্দুর রশিদের সাথে বিকেলে এ প্রতিবেদকে দেখা করতে বলেন।

একইভাবে ভাটা মালিক রফিকুল ইসলাম রানীশংকৈল-নেকমরদ মহাসড়কে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের বিপরীতে মহাসড়কের তার নিজস্ব জায়গাসহ মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে খড়ির স্তুপ দিয়েছেন।

তিনি মুঠোফোনে বলেন, ভাই যখন কয়লা পায় না তখন কিভাবে ভাটা চলবে বলেন তাই একটু কাঠ মুজদ করা হচ্ছে। একইভাবে আলী ভাটা তার প্রতিষ্ঠানের পাশেই কাঠ খড়ি মজুদ করছেন। 

এমনিভাবে উপজেলার ইটভাটার মালিকরা বিভিন্ন জায়গায় কাঠ কিনে ভাটায় জ্বালানোর জন্য আগে থেকেই খড়ি মুজদ করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা বলেন, বিষয়টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  



 

Bootstrap Image Preview