সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারায় আপত্তি জানিয়ে মানববন্ধন করছে সম্পাদক পরিষদ।
সোমবার বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন শুরু হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত আছেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন প্রমুখ।
এর আগে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সোমবার মানববন্ধন করার ঘোষণা দেয় সম্পাদক পরিষদ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদনের পর থেকেই তারা কয়েকটি দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো হলো- সাংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে।
উল্লেখ্য, শুরু থেকেই আইনটির সংশোধনী দাবি করে আসছে সম্পাদক পরিষদ। সংসদে বিল পাস হওয়ার পর সম্পাদক পরিষদ ২৯শে সেপ্টেম্বর মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। সে সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এই কর্মসূচি স্থগিত করে সম্পাদক পরিষদকে আলোচনায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান। এরপর তথ্যমন্ত্রীসহ সরকারের তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই আলোচনায় তিন মন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হবে এবং মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে এ নিয়ে আরও আলোচনা করা হবে। কিন্তু গত দুটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক পরিষদ তাদের বক্তব্যে বলেন, পরিষদের মৌলিক আপত্তি, বারবার প্রতিবাদ সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দুবার বৈঠক সত্ত্বেও মুক্ত সংবাদমাধ্যম, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি কালাকানুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে (ডিএসএ) আইনে পরিণত করায় তারা হতাশ, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।
তারা বলেন, তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, পরিষদের উদ্বেগের বিষয়গুলো মন্ত্রী সভায় উত্থাপন করা হবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রহণযোগ্য পরিবর্তন-পরিমার্জনার লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করা হবে। কিন্তু এসবের কিছুই করা হলো না। সম্পাদক পরিষদকে তিনমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারা মনে করেন এটি সেই প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ।