ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ৯টি ধারা সংশোধনের দাবিতে আজ সোমবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে সম্পাদক পরিষদ।
গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একই দাবিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমাদের মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল। কিন্তু তথ্যমন্ত্রীর অনুরোধে ওই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তারপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনজন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো ৩ অক্টোবর অথবা ১০ অক্টোবরের মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপন করে আমাদের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করার জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন চাইবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সে রকম কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তাই আমরা আমাদের স্থগিত কর্মসূচি আবারও ঘোষণা করছি।
সম্পাদক পরিষদ বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারাগুলো স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই আমরা এগুলোর সংশোধন চাইছি।
এর আগে শুরু থেকেই আইনটির সংশোধনী দাবি করে আসছে সম্পাদক পরিষদ। সংসদে বিল পাস হওয়ার পর সম্পাদক পরিষদ ২৯শে সেপ্টেম্বর মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। সে সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এই কর্মসূচি স্থগিত করে সম্পাদক পরিষদকে আলোচনায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান। এরপর তথ্যমন্ত্রীসহ সরকারের তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই আলোচনায় তিন মন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হবে এবং মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে এ নিয়ে আরও আলোচনা করা হবে। কিন্তু গত দুটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক পরিষদ তাদের বক্তব্যে বলেন, পরিষদের মৌলিক আপত্তি, বারবার প্রতিবাদ সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দুবার বৈঠক সত্ত্বেও মুক্ত সংবাদমাধ্যম, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি কালাকানুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে (ডিএসএ) আইনে পরিণত করায় তারা হতাশ, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।
তারা বলেন, তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, পরিষদের উদ্বেগের বিষয়গুলো মন্ত্রী সভায় উত্থাপন করা হবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রহণযোগ্য পরিবর্তন-পরিমার্জনার লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করা হবে। কিন্তু এসবের কিছুই করা হলো না। সম্পাদক পরিষদকে তিনমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারা মনে করেন এটি সেই প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ।