এমপির বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধিঃ
ট্রাক চালককে মারধর করার প্রতিবাদে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে স্থানীয় এমপি ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়ার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
শনিবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্যজোটের নেতৃত্বে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবহন শ্রমিকদের ঝাড়ু মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে স্থানীয় বাসিয়া সেতুর উপর সংক্ষিপ্ত প্রতিবা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বনাথ উপজেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্যজোটের সভাপতি ময়না মিয়ার সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য রাখেন- জেলা অটোরিক্সা-অটোটেম্পু চালক শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব। এ সময় এমপির হাতে মারধর খাওয়া ট্রাক ড্রাইভার কামরান হোসেন উত্তোজিত শ্রমিকদের সাথে মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভা থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ-আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্বনাথ-শিমুলতলা-পনাউল্লা সড়ক ব্যবহার করে গন্তব্যে যাওয়ার পথিমধ্যে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের প্রবাসী ইসলাম উদ্দিনের বাড়ির সামনে সড়ক দখল করে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজের গাড়ি থেকে নামেন স্থানীয় এমপি ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া। এ সময় এমপি সেই ট্রাক ড্রাইভারকে ছোট রাস্তা দিয়ে ওভার লোড নিয়ে মালবাহী ট্রাক আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেন।
ট্রাক ড্রাইভার কামরান আহমদ বলেন, আমি সড়কে ট্রাক দাঁড় করিয়ে বালু আনলোড করার সময় তিনি (এমপি) তার প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে আসেন। ট্রাকের কারণে প্রাইভেটকারটি সামনের দিকে যাচ্ছিল না। তাই আমি ট্রাকটি আরো সাইড লাগিয়ে কারের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেই। একজন ব্যক্তি (এমপি) প্রাইভেট কার থেকে নেমে এসে আমার খোঁজ করেন। আমি এগিয়ে যেতে আমাকে বলেন এই রাস্তা দিয়ে এত বড় ট্রাক নিয়ে কেন এসেছি।
তিনি বলেন, আমি তাকে (এমপি) জানাই আমি এই এলাকা চিনি না, যারা আমাকে নিয়ে এসেছে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন। সাথে সাথে তিনি (এমপি) আমাকে কয়েকটা চড়-থাপ্পর মারেন। আমি মার খেয়ে তাকে বলি জীবনে আর কখনও আসব না। তারপরও তিনি আরেক দফা আমাকে মারেন। যাওয়ার সময় পুলিশে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রবাসী ইসলাম উদ্দিনের স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, গাড়ি থেকে নেমে তিনি (এমপি) ট্রাক ড্রাইভারের খোঁজ করেন। ট্রাক ড্রাইভার এগিয়ে যেতেই তিনি (এমপি) ড্রাইভারকে জোরে জোরে কয়েকটা চর মারেন। আমি ভয়ে গেইটের ভিতরে চলে যাই।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় দিলু মিয়া জানান, মহিলার বাড়িতে পুরুষ মানুষ না (স্বামী বিদেশে) থাকায় তাদের সাথে চুক্তি করে আমি বালু আনি। কল্পনাও করিনি একজন এমপি এভাবে সড়কে দাঁড়িয়ে একজন ট্রাক ড্রাইভারকে মারধর করবেন।
স্থানীয় এমপি ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী বলেন, ৩ টনের চলাচলের উপযোগী সড়কে যদি ৬ টনের গাড়ি চলাচল করে, তাহলে সড়ক ব্লক হবে ও ভাঙ্গবে। সড়কগুলো রক্ষানাবেক্ষণ করা সকলের দায়িত্ব। আমি প্রতিবাদ করায়ও অপরাধী, আবার সড়ক ভাঙলেও অপরাধী। উন্নয়নের রক্ষনাবেক্ষন শুধু আমার নয়, বিশ্বনাথের সর্বস্তরের মানুষের দায়িত্ব।