Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফ্লোরিডায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে মাইকেল, নিহত ৬

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৫ PM
আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মাইকেল ‘অকল্পনীয় ধ্বংসযজ্ঞ’ চালিয়েছে। এতে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় মাইকেলের কারণে প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ছয়জন। বেশিরভাগই ফ্লোরিডার বাসিন্দা। ফ্লোরিডার গভর্নর রিক স্কট এক বিবৃতিতে বলেন, বহু মানুষের জীবন একেবারেই বদলে গেছে। অনেক পরিবারই তাদের সব কিছু হারিয়েছে।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে। সেখানে অনেক বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, গাছপালা উপড়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

স্থানীয় সময় বুধবার ঘূর্ণিঝড় মাইকেল ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়ে। সে সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার।

তবে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় এর শক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কিন্তু পুরোপুরি শান্ত হওয়ার আগে এই শক্তিশালী ঝড়ের আঘাতে ছয়জন প্রাণ হারিয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ফ্লোরিডার।

সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষকে ইতোমধ্যেই ফ্লোরিডা থেকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছিল। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, অনেক বাসিন্দাই সতর্কতা মেনে চলেনি।

গভর্নর স্কট বলেন, মার্কিন উপকূলীয় রক্ষী বাহিনী রাতভর ১০টি অভিযান চালিয়েছে। তারা কমপক্ষে ২৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে।

মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড়টিকে ক্যাটাগরি দুই বলা হলেও বুধবার সকালেই ঘূর্ণিঝড়কে ক্যাটাগরি চার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ মাইল। ফ্লোরিডার গভর্নর রিক স্কট সতর্ক করে বলেছেন, শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় এটি। ঘূর্ণিঝড়টি এতটাই বিধ্বংসী যা অকল্পনীয়।

ঘূর্ণিঝড়ের আগের সব রেকর্ড থেকে দেখা গেছে যে, ১৮৫১ সালের পর ক্যাটাগরি চার মাত্রার কোন ঘূর্ণিঝড় ফ্লোরিডায় আঘাত হানেনি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলের কাছাকাছি শহরগুলোতে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

মার্কিন ভূখণ্ডে আঘাত হানা মাইকেল তৃতীয় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টিকে ক্যাটাগরি চার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানামা সিটির বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর প্রভাবে সেখানে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে।

১৮৯৮ সালের পর এটাই প্রথম ক্যাটাগরি তিন মাত্রার ঝূর্ণিঝড়। যদিও ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি কমে যাচ্ছে তবুও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এর আগে ১৯৬৯ সালে মিসিসিপিতে হারিকেন ক্যামিলি আঘাত হানে।

ঘূর্ণিঝড় মাইকেলের প্রভাবে বুধবার বিকেলে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। সে সময় এই ঝড়কে তিন মাত্রার ঘূর্ণিঝড় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফ্লোরিডার পেনহ্যান্ডেল এলাকায় ১২৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো বাতাস বয়ে গেছে। জরুরি বিভাগ জানিয়েছে, ফ্লোরিডা, আলাবামা এবং জর্জিয়ায় আরও পাঁচ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

পানামা সিটি, মেক্সিকো বীচে বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া অ্যাপালাচিকোলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ২ হাজার ৩শ মানুষ বসবাস করে। ধ্বংসস্তুপ এবং আকস্মিক বন্যার পানির কারণে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এক বিবৃতিতে গভর্নর স্কট বাসিন্দাদের আহ্বান জানিয়েছেন যে, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ধ্বংসস্তুপ থেকে সব কিছু নিরাপদ কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন ফিরে না যায়।

Bootstrap Image Preview