কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষার্থী পরিবহন বাসে দৃর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী দ্বীন মোহাম্মদ এবং বাসটির চালক আলাউদ্দিন আহত হন। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেলতলী বিশ্বরোড দুই ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এতে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ধরে যানজট সৃষ্ট হয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসে এবং ৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার ভাড়া করা একটি বাস ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের গেটে আসলে হঠাৎ সামনের দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল বাসের গতিরোধ করে। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা ২/৩ জন বাস ড্রাইভার আলাউদ্দিনের উপর চড়াও হয় এবং তাকে বাস থেকে নিচে নামিয়ে মারধর করে।
এ সময় চালককে মারধর করার কারণ জানতে চান গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী দ্বীন মোহাম্মদ। এ সময় তারা দ্বীন মোহাম্মদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আশেপাশ থেকা বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র ও চাপাতি নিয়ে তার উপর হামলা চালায়।এ সময় বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা ভিডিও করার চেষ্টা করলে মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় এবং বাস আটকিয়ে রাখে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাত ৮:৩০ মিনিটের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের থামানো চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনতে পুলিশকে ৬ ঘন্টার সময়সীমা বেধেঁ দেয় শিক্ষার্থীরা। পুলিশ প্রশাসন ৬ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বস্ত করলে শিক্ষার্থীরা পৌনে ১০টায় তাদের অবরোধ তুলে নেয়।
এ সময় বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে ভিক্টোরিয়া কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য আশিকের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। তবে এ বিষয়ে আশিক নিজে হামলা করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে ঝগড়া হলে তারা মারধর করে। তখন ঘটনা শুনে আমি সেখানে যাই এবং থামানোর চেষ্টা করি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মাদ কামাল উদ্দীন বলেন, আমি ঘটনা জানতে পেরে সাথে সাথে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি। আমরা তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে মামলা করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা সেই অনুযায়ী মামলা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো।
এ বিষয়ে সদর দক্ষিণ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো: গোলাম আম্বিয়া মাহমুদ বলেন, আমরা রাতেই হামলাকারীদের শনাক্ত করার কাজ শুরু করবো। আমাদের ইন্টালিজ্যান্স টিম কাজ করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করবে বলেছে।
এদিকে এর আগেও গত ১৩ মে কুমিল্লা পুলিশ লাইন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বহনকারী কয়েকটি বাসে কোন কারণ ছাড়াই স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ভাংচুর করে। ঐ হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এর কোন বিচার এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আদায় করতে পারেনি। ফলে ক্ষোভে ফোঁসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা।