সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) আইন বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে (শিক্ষা সমাপনী) র্যাগ ডে উদযাপন করেছে।
গত বুধবার দিনভর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘স্নাতক’ বিদায়ী এ ব্যাচটির শিক্ষার্থীরা এ আয়োজন করেন। সকাল থেকে ক্যাম্পাস যেন ভরে উঠছিল সাদা আর গোলাপী রংয়ের মহোৎসবে। ছাত্ররা সাদা টি-শার্ট ও ছাত্রীরা গোলাপী রংয়ের পোশাকে রাঙিয়ে দিয়েছিল ক্যাম্পাস।
এ সময় হৈ হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন তাঁরা, তাদের দেখে চেনার কোনো উপায় ছিল না। লাল, নীল, সবুজ, হলুদ আবীরের রঙে রাঙিয়ে দেন একে অন্যকে। প্রিয়জনদের রঙ্গিন কলমের নানান লেখায় ভরে গেছে সাদা টি-শার্টগুলি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিনটিকে মনের মণিকোঠায় আগলে ধরে রাখতে রং মেখে স্মরণীয় করে রাখেন। শিক্ষাজীবনের শেষ সময়টাকে স্মৃতিময় করে রাখতে ক্যামেরা আর মুঠোফোনে চলতে থাকে ক্লিক ক্লিক শব্দ। সঙ্গে চলে ফটোসেশন আর সেলফির মাতামাতি। তাদের অনেকেই পেছনে ফেলে আসা চারটি বছরকে স্মরণ করে স্মৃতির পাতা তুলে ধরেন সবার মাঝে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ দেলোয়ার হোসেন, বিভাগীয় প্রধান মোঃ রফিকুল আলম, সহকারী অধ্যাপক মোঃ নাহিদুল ইসলাম, সিনিয়র প্রভাষক ফারাহ ইকবাল, প্রভাষক মাহবুবুর রহমান, সহকারী প্রভাষক সোহরাব হোসাইনসহ বিভাগের শিক্ষকরা। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব সঞ্চালনা করেন এনায়েতউল্লাহ কৌশিক। দ্বিতীয় পর্বে মুন্নি আক্তার, ইসতিয়াক আহমেদ, মার্জিয়া তৈহিবুর।
বিভাগীয় প্রধান মোঃ রফিকুল আলম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ তোমাদের শিক্ষাজীবন পূর্ণতা পেল। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তোমরা পরিপূর্ণ হতে পারো সেই চেষ্টাই প্রতিনিয়ত করবে।
র্যাগডে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে এনায়েতউল্লাহ কৌশিক হয়ে যান স্মৃতি কাতর। তিনি বলেন, ‘বিশ্বদ্যিালয় জীবনে এতগুলো বছর একসাথে কাটানোর পর বিদায়ের বিষাদ নাড়া দিয়ে যাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। তবে র্যাগ ডে এই বর্ণিল উদযাপনের স্মৃতি মনে থাকবে সারা জীবন।’
মুন্নি আক্তার জানান, বার বার মনে হচ্ছে আরো কিছুদিন যদি ক্লাস করতে পারতাম। অনেক অনেক আনন্দ থাকা সত্যেও বুকের মধ্যে কষ্ট অনুভূত হচ্ছে। বন্ধুদের দিকে তাকালে চোখ কথা শুনছেনা। বন্ধুত্বের অটুট বন্ধন বজায় থাক সারাজীবন।
এদিকে, র্যাগ ডে উপলক্ষে বেলা ৩টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে ১১তম ব্যাচের উদ্যোগে নাচ, গান, কৌতুকসহ বিভিন্ন আয়োজন ছিল।
ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাদের মজার স্মৃতি, সুখ-দুঃখ, আনন্দ বেদনার বিভিন্ন ঘটনা। কিন্তু চার বছর পর মনের কোণে হঠাৎ যেন বেঁজেছে বিদায়ের ঘন্টা। তাইতো বিদায় ক্ষণে বিভাগের পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ ও প্রিয় ছোটরাও আমাদের বিদায়ের করুণ সুরে সুর মিলিয়েছে।