Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ সোমবার, মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দ্বিতীয় দফায় গড়াতে পারে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১৫ AM
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১৫ AM

bdmorning Image Preview


দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ব্রাজিলে গতকাল রবিবার সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনও। ১৯৮৫ সালে ব্রাজিলে সেনাশাসনের অবসানের পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবারই প্রথম হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মুখোমুখি হলো দেশটি, এমন অভিমত পর্যবেক্ষকদের। সাবেক প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।

ব্রাজিলে গতকাল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব ডেপুটিজের ৫১৩ সদস্য, উচ্চকক্ষ সিনেটের ৮১ সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশ, ২৭টি রাজ্যের সব আইন প্রণেতা এবং গভর্নর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলার কথা। এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ১৪ কোটি ৭০ লাখ। ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বুথফেরত জরিপের ফল প্রকাশ শুরু হওয়ার কথা।

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ব্রাজিলের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াতে পারে। কারণ দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জনপ্রিয় নেতা লুলা এবারের নির্বাচনের অংশগ্রহণ করতে না পারায় বাকি প্রার্থীদের কারো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের সম্ভাবনা কম। তেমনটা ঘটলে আগামী ২৮ অক্টোবর দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে।

পর্যবেক্ষকরা কেন দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা বলছেন, প্রার্থীদের বর্তমান অবস্থান বিবেচনায় নিলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। দেখে নেওয়া যাক ১৩ জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে শীর্ষ কয়েকজনের নির্বাচনপূর্ব অবস্থান—

 সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও কট্টর ডানপন্থী বলসোনারো ১৯৯১ সাল থেকে কংগ্রেস সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন কোনো বড় দলের সমর্থন ছাড়াই। এবারের নির্বাচনপূর্ব জরিপে ৩৬ শতাংশ সমর্থন নিয়ে তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন। দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতিতে আমূল সংস্কার আনাই তাঁর উল্লেখযোগ্য নির্বাচনী অঙ্গীকার।

এ ছাড়া ৬৩ বছর বয়সী জনপ্রিয় এ প্রার্থী ব্যক্তিমালিকানায় বন্দুক রাখার পক্ষে এবং আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহাল করারও পক্ষে। ফার্নান্দো হাদ্দাদ : মূলত লুলা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারায় ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে হাদ্দাদকে সামনে আনা হয়েছে। ৫৫ বছর বয়সী এ প্রার্থীকে লুলার বিকল্প হিসেবে দাঁড় করানো হলেও জনপ্রিয়তায় তিনি খানিকটা পিছিয়ে। ব্রাজিলের বৃহত্তম শহর সাও পাওলোর সাবেক গভর্নর ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী হাদ্দাদ নিজের কোনো বিশেষত্ব প্রমাণ করতে পারেননি। নির্বাচনে তাঁর প্রধান অবলম্বন হলো লুলার একান্ত সমর্থন।

মধ্য বামপন্থী এ রাজনীতিক এর আগে দুই দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে গেছেন। ডেমোক্রেটিক লেবার পার্টির ৬০ বছর বয়সী এ নেতা অন্যান্য বামপন্থী দলের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় এবারও তিনি আসলে একাকী রয়ে গেছেন। সাবেক ও বর্তমান সরকারের ঠোঁটকাটা সমালোচক হওয়া সত্ত্বেও তিনি ভোটারদের খুব একটা আকৃষ্ট করতে পারেননি।

১২ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত লুলা এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া দূরে থাক, নিজের ভোটটা দিতে পর্যন্ত পারেননি। নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার কারণ হলো, দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত লুলা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

নিজের ভোটটা হয়তো লুলা দেওয়ার সুযোগ পেতেন, যদি একই কারাগারে বন্দি কমপক্ষে আরো ২০ জন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করত। সে ক্ষেত্রে কারাগারে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হতো। কিন্তু কেউ আগ্রহ না দেখানোয় তাঁর একার জন্য ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়নি।

সাজাপ্রাপ্ত হয়েও লুলা এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে। বিভিন্ন জনমত জরিপ বলছে, প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারলে গতকালের নির্বাচনে তিনি অনায়াসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতেন।

Bootstrap Image Preview