তীব্র বিতর্ক, সমালোচনার পর সেই ব্রেত কাভানাই যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেলেন। শনিবার তাকে শপথ বাক্য পড়ানোর মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদের অধিকারী হলেন।
তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী, সমর্থনপুষ্ট বিচারক। শনিবার সিনেটের পূর্ণ ভোটে দুই ভোটের ব্যবধানে কাভানার নিয়োগ নিশ্চিত হয়।
কাভানার এ দ্বান্দ্বিক অভিষেকে ৯ সদস্যের সুপ্রিমকোর্টে আধিপত্য হারাল উদারপন্থী ডেমোক্র্যাটরা। আর ক্ষমতার দুই বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো একটি বড় জয় পেলেন ট্রাম্প। খবর-বিবিসি ও সিএনএনের।
পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে ৫১-৪৯ আসনে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। কাভানা রিপাবলিকানদের ৪৯টি ভোট পেয়েছেন। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে রিপাবলিকান সিনেটর স্টিভ ডেইনেস সিনেটে অনুপস্থিত ছিলেন। রিপাবলিকান লিসা মুর্কওয়াস্কি কাভানাকে ভোট দেননি। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে জো মানচিন দলের বাইরে গিয়ে কাভানাকে ভোট দিয়েছেন।
এতে ৫০-৪৮ ভোটে জিতেছেন কাভানা। নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে কাভানার নিয়োগ নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টিকে ট্রাম্পের রাজনৈতিক বিজয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সিনেটে ভোটাভুটির আগে কাভানার মনোনয়নের বিরুদ্ধে রাজধানী ওয়াশিংটনে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেন।
ভোটের সময় সাধারণ গ্যালারি থেকে বিক্ষোভকারীরা ‘লজ্জা লজ্জা’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। সন্ধ্যায় সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস কাভানাকে সাংবিধানিক শপথ করান। আর বিদায়ী বিচারপতি অ্যান্থনি কেনেডি তাকে বিচারবিষয়ক শপথ পাঠ করান।
নিয়োগের মধ্য দিয়ে ৫৩ বছর বয়সী কাভানা সারা জীবনের জন্য সুপ্রিমকোর্টে নিয়োগ পেলেন। এতে নয় সদস্যের সুপ্রিমকোর্টে রক্ষণশীলদের অবস্থান আরও শক্ত হল। বর্তমানে ৫ বিচারপতি ট্রাম্পপন্থী অর্র্থাৎ রক্ষণশীল। বাকি চারজন উদার ডেমোক্রেটিকপন্থী।
এতদিন সুপ্রিমকোর্টে ডেমোক্রেটিক দলের আধিপত্য ছিল। মার্কিন রাজনীতি ও সামাজিক অবস্থানে সুপ্রিমকোর্টের প্রভাব অপরিসীম। সুপ্রিমকোর্টের কথাই সেখানে শেষ কথা।
টুইটারে কাভানাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ট্রাম্প। পরে তিনি এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, “কাভানাকে ‘ডেমোক্র্যাটদের ভয়াবহ আক্রমণের’ মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তিনি শতভাগ নিশ্চিত, যে নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন, তিনি ভুল করে কাভানার নাম বলেছেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতে পৌঁছাতে কাভানাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে তিক্ত বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে। যদিও সব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে আসছেন।
গত ৩১ জুলাইয়ে বিচারপতি অ্যান্থনি কেনেডি অবসরে যাওয়ার পর শূন্য পদের জন্য কাভানাকে বেছে নেন ট্রাম্প। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টিন ব্ল্যাসি ফোর্ড তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনার পর শুরু হয় বিতর্ক। ফোর্ডের অভিযোগ তদন্ত করে ৪ অক্টোবর এফবিআই জানায়, অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।