পাকিস্তানের সিন্ধুপ্রদেশের মিথি স্থানটি হিন্দুপ্রধান অঞ্চল। পাকিস্তানের থারপারকার জেলার রাজধানী হচ্ছে মিথি। মিথির মোট দেড় লাখ অধিবাসীর ৮০ শতাংশই হিন্দু। মূলত পাকিস্তানের সিন্ধুপ্রদেশেই সবচেয়ে বেশি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ হিন্দু সিন্ধুপ্রদেশের।
জানা গেছে, মিথির সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু অধিবাসীরাও মহররম দিবস পালন করে থাকেন। মহররমে হিন্দুরাও শোক প্রকাশ করে। একে অন্যের পরিবারে খাবার ও পানীয় বিতরণ করে থাকে।
বিবিসির এক ভিডিও প্রতিবেদনে এসব কথা জানিয়েন মিথি জেলার মুকেশ নামের এক হিন্দু অধিবাসী।
ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ঐতিহাসিক কারবালার প্রান্তরের ইমাম হোসেনের ঘোড়া জুলজানার প্রতীকী হিসেবে একটি ঘোড়াকে সাজাচ্ছেন মুকেশ।
তার উদ্দেশ্য, এবারের মহররমে ঘোড়াটিকে নিয়ে শোক প্রকাশ অনুষ্ঠানে যাবেন।
বিবিসিকে মুকেশ জানান, শুধু মুসলিমরা নয় আমরা হিন্দুরাও ইমাম হোসেনকে ভালোবাসি আর শ্রদ্ধা করি।
অন্য ধর্মের হয়ে কেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর দৌহিদ্র ইমাম হোসেনকে ভালোবাসেন সে ব্যাখ্যায় মুকেশ বলেন, হোসেন শুধু মুসলিমদের জন্যই নয়, তিনি সবার জন্য মানবতা এবং ভালোবাসার বার্তা নিয়ে এসেছিলেন।এটা তারা বিশ্বাস করেন।
মুকেশ জানায়, মিথি জেলার হিন্দুরা মহাররম এলে কালো কাপড় পরে শোক প্রকাশ করেন এবং এদিন মুসলামানদের সঙ্গে মিছিলে যান ।
অনেক হিন্দু মসজিদে আগরবাতি দান করেন এবং তারা হোসেনকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানান। তার জন্য শোকও প্রকাশ করেন।
মহররম অনুষ্ঠানে হিন্দুদের এভাবে যোগদানের প্রতিদান স্বরুপ মিথি জেলার শিয়া মুসলিমরাও হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। বহুদিন ধরে তারা একে অন্যের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নিচ্ছেন।
অনেকেই বিষয়টাকে মিথি জেলার মুসলিম ও হিন্দুর মধ্যে সম্প্রীতির বিরল দৃষ্টান্ত বলে আখ্যায়িত করছেন। ধর্মীয় উৎসবে পারস্পারিক ধর্ম বিনিময় বলছেন।
তবে মুসলিমদের মধ্যে কেবল শিয়ারাই যে ১০ মহরম এভাবে পালন করে থাকেন সে কথাও জানা সকলের।
প্রসঙ্গত, মিথি নগরী থেকে পাকিস্তান জাতীয় সংসদে মুসলীম লীগ হতে রামেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানি নামের একজন হিন্দু সাংসদ আছেন।