'অন্ধকারকে ভয় করা নয়, অন্ধকারকে আলো করাই পৌরুষ' ধারাভাষ্যের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব-২০১৮ এর সপ্তম আসরের দ্বিতীয় দিনে মঞ্চায়িত হয়েছে ভারতীয় নাট্যদল অনীকের নাটক 'বিষঘুম'।
শনিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে এই নাটকটি মঞ্চায়িত হয়। নাটকটির রচয়িতা জ্যোতিস্মান চট্যোপাধ্যায় এবং নিদেশনায় এবং বৈদ্যনাথ চরিত্রে ছিলেন অরূপ রায়।
এ সময় উপস্থিত দর্শক এবং নাট্যব্যক্তিত্ব লাবলু বলেন, সত্য মানুষের জীবনে ঠিক কী কী পরিণতি নিয়ে আসতে পারে সেটা বোঝানোই ছিল নাটকের মূল লক্ষ্য। সত্য কখনও বিস্ময়কর, কখনও ভয়াবহ আবার কখনও আনন্দদায়ক। পুরো নাটকজুড়ে সত্যের নানারূপ রূপান্তর এবং তার উপর ভিত্তি করে প্রত্যেকটি চরিত্রের বৈচিত্র্যময় প্রত্যাবর্তনই ছিল নাটকটির আকর্ষণ।
এ ছারাও সন্ধ্যা ৪টা ৩০ মিনিট থেকে মুক্তমঞ্চে তাল কালচারাল একাডেমীর শিশু সংগঠন পরিবেশনা, কথা-আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র এবং ঢাকা স্বরকম্পন দলের আবৃত্তি পরিবেশনা, বহ্নিশিখা ও ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর দলীয় সংগীত মঞ্চায়িত হয়। সন্ধ্যা ৭টায় এক্সপেরিমেন্টাল হলে আবদুল্লাহ আল-মামুনের নাটক মেরাজ ফকিরের 'মা' পরিবেশিত হয়।
এ ছাড়া আগামীকাল ৭ অক্টোবর জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে পরিবেশিত হবে প্রাচ্যনাটের নাটক 'এ ম্যান ফর অল সিজনস' এবং এক্সপেরিমেন্টাল হলে আরণ্যক নাট্যদল মঞ্চায়িত করবে 'দি জুবিলী হোটেল'।
উল্লেখ্য, গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব এর প্রথম আহ্বায়ক অমোলেশ চক্রবর্তীর নাট্যদল এটি। তার একটি চিঠির উপর ভিত্তি করেই দুই বাংলার সমন্বয়ে আজকের এই নাট্যোৎসবটি জন্ম নিয়েছিল।
'বিষঘুম' শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে এক ধরনের সাপ থেকে। যার বিষাক্ত কামরে মানুষের ঘুম পায়। আর ঘুমের ভেতরই ধিরে ধিরে হয় মৃত্যু। কিন্তু কেউ যদি দুই ঘণ্টা না ঘুমিয়ে জেগে কাটাতে পারে তবে বিষ তার প্রভাব হারিয়ে ফেলে।
একটি গভীর দর্শন তত্তের প্রতিফলন হয় এই রোমাঞ্চকর নাটকের মধ্যেদিয়ে। নাটকটিতে 'বিষ', মানুষের জিবনের সকল অনিবার্য এবং অভেদ্য সত্যের প্রতিকি ব্যবহার হিসেবে দেখানো হয়েছে। যে সত্যের মধ্য দিয়ে কারও কারও জীবনে নেমে আসে অন্ধকার আর কারও অশেষ ধৈর্য্য এবং সাহসের জোরে খুলে জায় আলোর নতুন দিশা।