রাজধানীর রামপুরায় এক মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণ করার পর তাকে হত্যা করে মাদরাসার অজুকক্ষে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আসামিদের বিচার চেয়ে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী ও ধর্ষিতা মাদরাসাছাত্রীর স্বজনরা।
আজ শুক্রবার (৫ অক্টোবর) রামপুরা বাজারে উক্ত প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে মাদরাসার অধ্যক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রতিবাদকারীরা।
জানা যায়, রামপুরায় স্থানীয় উলন জাতীয় মাদরাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলো ধর্ষিতা ঐ কিশোরী। সে উক্ত মাদরাসার আবাসিক ছাত্রী ছিলো। ধর্ষিতা ঐ কিশোরী মা একটা গার্মেন্টসে কাজ করেন আর বাবা একজন ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা। তাদের তিন সন্তানের মাঝে মিম বড়।
ধর্ষিতা মাদরাসাছাত্রীর মা জানান, গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মেয়ের জন্য খাবার নিয়ে মাদরাসায় যান তিনি। মাদরাসায় গিয়ে দেখেন সব কক্ষে তালা মারা এবং ভেতরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এসময় মাদরাসার হুজুর আর বুয়ারা মিলে তাকে ধরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা মাদরাসার একটি ঘরে আটকে রাখে। তার ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার সঙ্গে এমন রহস্যজনক আচরণ করায় তার মনে হতে থাকে তার মেয়েকে বোধহয় মেরে ফেলা হয়েছে। মাদরাসার এক আয়া রওশন আরাকে তিনি অনুরোধ করেন মেয়ের একটা খবর এনে দিতে। কিন্তু তার অনুরোধ রাখা হয়নি বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, মাদরাসার ভেতরে পুলিশ দেখতে পেয়ে তিনি আরও বেশি ভয় পেয়ে যান। পরে পুলিশ লাশ নামিয়ে নিয়ে চলে যায়। এবং মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হয় যে মিম আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ সীমা কিংবা এলাকাবাসীদেরকে তখন লাশ দেখতে দেয়নি। মিমের লাশ মাদরাসার অজুকক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা জানান, এ হত্যার বিচার চেয়ে তারা এখানে এসেছেন। যেখানে ধর্মের চর্চা হয় সেখানে কোনোভাবেই এই হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। হত্যার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানান প্রতিবাদ মিছিলকারীরা। পরে পুলিশ এসে প্রতিবাদকারীদের রামপুরা বাজার এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর পুলিশের অনুরোধে তারা স্লোগান দিতে দিতে ডিআইটি রোডের দিকে যান।
প্রতিবাদ মিছিলে উপস্থিত মাদরাসার ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, লাশের পা মাটিতে মিশে ছিল তাই ধারণা করা হচ্ছে এটা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা নয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে ধর্ষিতা মাদরাসাছাত্রীর লাশ নামিয়েছে এমন একজন উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তি বলেন, ‘লাশ নামানোর সময় তিনি ঐ কিশোরীর হাতে পায়ে দড়ির দাগ দেখতে পান। এমনকি কোমরে মারধরের দাগ ছিল। এক পায়ের গোড়ালিতে আরেকটা ক্ষত ছিল।’