চিকিৎসকরা প্রথমে জানালেন ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে। ভুল শুধরে কিছুক্ষণ পর পরিবার জানতে পারল, ছেলে ভেন্টিলেশনে রয়েছে। কিন্তু রাতভর সেই ছেলে রইল মর্গের ফ্রিজারে। ভোরবেলা পরিবার যখন মর্গে গিয়ে ছেলের খোঁজ পেল, তখনও নাকি তার শরীরে ক্ষীণ শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিল। শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি, হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলেই ঘোষণা করা হয় আঠারো বছর বয়সি ওই তরুণকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ইনদৌরে। মৃত ওই তরুণের নাম কৈলাস চহ্বাণ।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে একটি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন কৈলাস। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় এমওয়াই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কৈলাসের পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে অন্য রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কৈলাসের চিকিৎসাই শুরু করেননি চিকিৎসকরা। কিছুক্ষণ পরেই কৈলাসকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
কৈলাসের পরিবারের দাবি, এর পরই তাঁরা লক্ষ্য করেন ওই তরুণ সামান্য নড়াচড়া করছেন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের বিষয়টি জানানো হয়। তখন হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, কৈলাসকে ভেন্টিলেশনে রাখার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যদিও তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে জানানো হয়।
শুক্রবার সকালে পুলিশ ওই পরিবারের বয়ান নথিভুক্ত করার জন্য হাজির হয়। তাঁদেরকে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর ওই পরিবারটি যা দেখে, তা যেন নিজেরাই বিশ্বাস করতে পারছিল না।
যে ছেলেকে ভেন্টিলেশনে রাখার জন্য আগের দিন রাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাঁকেই মর্গের ফ্রিজারে দেখে শিউরে ওঠে কৈলাসের পরিবার। কৈলাসের শোকস্তব্ধ বাবার কথায়, ‘‘তখনই আমরা বুঝতে পারি যে, সারারাত আমার ছেলেকে মর্গেই রাখা হয়েছিল।’’
এখানেই হয়রানির শেষ নয়। ওই পরিবারে সঙ্গে এক আত্মীয় ছিলেন, যিনি পেশায় নার্স। মর্গে গিয়ে তিনি কৈলাসকে পরীক্ষা করে দাবি করেন, তখনও ক্ষীণ শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। অবিশ্বাস্য কিছু ঘটার আশায় ফের কৈলাসকে নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছোটেন তাঁর পরিবারের লোকজন। সেখানে অবশ্য কৈলাসকে মৃত বলেই ঘোষণা করা হয়।
মর্গ থেকে কৈলাসকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানকার এক চিকিৎসক দাবি করেছেন, সম্ভবত হাসপাতালে নিয়ে আসার এক থেকে দে়ড় ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে কৈলাসের। ময়নাতদন্ত করলেই অবশ্য মৃত্যু সঠিক সময় বোঝা যাবে।
আহত অবস্থায় প্রথমে ওই তরুণকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানকার এক চিকিৎসক অবশ্য দাবি করেছেন, অ্যাম্বুল্যান্সের টেকনিশিয়ান তাঁদের জানান যে পথেই ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গোটা ঘটনায় হাসপাতালের গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।