Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কে এনেছিল ঢাকার আদি মুদ্রণ যন্ত্র ‘অ্যালবিয়ন প্রেস’?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:৫১ PM
আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:০২ PM

bdmorning Image Preview
ঢাকার আদি মুদ্রণ যন্ত্র ‘অ্যালবিয়ন প্রেস’। ছবি : বিডিমর্নিং।


কে বা কারা এনেছিলেন তা সনাক্ত না হলে এতটুক নিশ্চিত যে এটিই ছিলো ঢাকার আদি মুদ্রণ যন্ত্র ‘অ্যালবিয়ন প্রেস’। বর্তমানে এ মুদ্রণ যন্ত্রটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এর নগর ভবনে অবস্থিত নগর জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

জানা যায়, ১৮৪৭ সালে স্যামুয়েল বোস্ট যে যন্ত্রটি এনেছিলেন তাও অ্যালবিয়ান প্রেস, কিন্তু এটিও সে যন্ত্র নয়। ধারণা করা হয় গত শতকে কোনো মুদ্রণ ব্যবসায়ী আমদানী করেছিন এ যন্ত্রটি। প্রদর্শনের জন্য প্রায় নিখুঁত অ্যালবিয়ান প্রেসের এই নিদর্শনটি হয়তো এখন এই একটিই।

নগর জাদুঘর সূত্রে জানা যায়, নগর জাদুঘরের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত এ যন্ত্রটির নাম ‘আ্যালবিয়ান প্রেস’। ১৮২২ সালে গ্রেট বৃটেনের আর ডব্লিউ কোপ, আ্যালবিয়ান আয়রন প্রেস নির্মাণ করে বাজারজাত করেন।

ঢাকা তথা বাংলাদেশের সংস্কৃতির ঐতিহ্য, ইতিহাসের একটি অন্যতম উপাদান পুরনো এই মুদ্রণ যন্ত্রটি সংগ্রহ করার জন্য সচেষ্ট হয় ঢাকা নগর জাদুঘর। ১৯৮৯ সালে পুরান ঢাকার একটি র্জীণ বাড়ি থেকে জাদুঘরের ট্রাষ্টি হাশেম সুফী এই মুদ্রণ যন্ত্রটি উদ্ধার করেন।

ঢাকা নগর জাদুঘর যাতে এই্ নিদর্শনটি সংগ্রহ করতে পারে সে জন্য জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক যন্ত্রটি ক্রয়ের জন্য সমুদয় অর্থ নগর জাদুঘরকে দান করেন। তার দানের ফলেই নিদর্শনটি ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, সুইজারল্যান্ডের মিশনারী স্যামুয়েল বেস্ট ১৮৪৭ থেকে ৪৮ এর দিকে ঢাকায় প্রথম মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপন করেছিলেন। এর পরই যে মুদ্রণ যন্ত্রটির খবর পাওয়া যায় তা ‘ঢাকা নিউজ’ এর মুদ্রণ যন্ত্র ছিলো।

এর পর ১৮৬০ সালে ঢাকা শহরের বাবু বাজারে স্থাপিত বাঙালা যন্ত্র শুধু ঢাকাতেই নয় পূর্ববঙ্গের অন্যান্য অঞ্চলেও মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপণ ত্বরান্মিত করেছিল। বাঙালা যন্ত্র ঢাকার সমাজ জীবনে যতটা প্রভাব বিস্তার করেছিল আর কোনো মুদ্রণ যন্ত্র কোনো শহরে তা করতে পেরেছে কিনা সন্দেহ।

এ যন্ত্র থেকেই মুদ্রিত হয়েছিল ঢাকার প্রথম সাপ্তাহিক সংবাদপত্র ঢাকা প্রকাশ যা টিকেছিলো প্রায় একশ বছর। দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ মুৃদ্রিত হয়েছিল এ যন্ত্রেই। ষাটের দশক থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপিত হতে থাকে যার ফল ছিল সুদুর প্রসারী এবং ইতিবাচক।

জি ডব্লিউ ‘শ এর পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৮৫৭ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত ঢাকা শহরে মুদ্রিত বইয়ের সংখ্যা ছিল ৩৪৪২ (আনুমানিক) এবং মুদ্রণ যন্ত্র বা প্রেসের সংখ্যা ছিল ৪৩টি ( আনুমানিক)।

মুদ্রণ যন্ত্রটি নগর জাদুঘরে দর্শকদের কাছে অন্যতম আকর্ষনীয় জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ডেপুটি সোশ্যাল ওয়েলফার এ্যান্ড কালচার অফিসার মো: লুৎফর রহমান চৌধুরী বিডিমর্নিংকে বলেন, আমরা ঢাকা নগর জাদুঘর স্থানান্তরের করে বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা নিয়েছি। সংরক্ষিত এই ভারী মুদ্রণ যন্ত্রটি জাদুঘরটি স্থানান্তরের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে আরো ভালোভাবে তুলে ধরতে পারবো।

Bootstrap Image Preview