Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শনিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে কারনে সু চির নাগরিকত্ব কেড়ে নিল কানাডা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:১৫ PM
আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:১৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


মিয়ানমারের নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সু চির সম্মানসূচক নাগরিকত্ব বাতিলের একটি প্রস্তাব কানাডার পার্লামেন্টে সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। রাখাইনের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর রাষ্ট্রের গণহত্যা ও দমন-নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থতার কারণেই তার এ সম্মাননা কেড়ে নেয়া হয়েছে।

সু চি ২০০৭ সালে যখন অটোয়া থেকে এই সম্মান লাভ করেন তখন তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু, গত বছর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন ও নিপীড়নের ফলে ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে সু চি সমালোচনার সম্মুখীন হন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ওই হত্যাযজ্ঞকে ‘জাতিগত নিধনের আদর্শ উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। কিন্তু, সু চি সেনাবাহিনীর এই কর্মকাণ্ডের কোনো নিন্দা বা সমালোচনা করেননি।

এর আগে সু চির অক্সফোর্ড, গ্লাসগো, এডিনবরা ও নিউক্যাসলের ফ্রিডম অব সিটি পুরস্কারও বাতিল হয়েছে। সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারে গণতন্ত্রের দাবিতে অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৯১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান সু চি। তার আগে পরে দীর্ঘ গৃহবন্দী দশার মধ্যেই বহু সম্মাননা, সম্মানসূচ ডিগ্রি ও পুরস্কার ঘোষণা করা হয় সু চির নামে।

বেসামরিক সরকার ব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তনের পর ২০১৫ সালে নির্বাচনে জিতে সু চি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর হন। দেশের বেসামরিক প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন তারই হাতে। তবে সাংবিধানিকভাবে সেনাবাহিনী এখনো বিপুল মতাধর।

গত বছর আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ঘটনা রোধে কার্যকর পদপে না নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন মিয়ানমারের ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেত্রী। দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়ে গত এক বছরেই দেশটি ছেড়ে অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

গত মাসে প্রকাশিত জাতিসঙ্ঘের এক রিপোর্টে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার হওয়া দরকার বলেও রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে।

বিশ্ব দরবারে তার শান্তিকামী-গণতন্ত্রমনা মুখোশ খসে পড়ে। সু চি সমালোচনার সম্মুখীন হন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা পর্যন্ত ওই হত্যাযজ্ঞকে ‘জাতিগত নিধনের আদর্শ উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

অথচ মনের ভুলেও সেনাবাহিনীর এ কর্মকাণ্ডের কোনো নিন্দা বা সমালোচনা করেননি সু চি। সমালোচনা না করার বিষয়ে অটল থাকাতেই এ সম্মানসূচক নাগরিকত্ব বাতিল করা হল বলে জানিয়েছেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের মুখপাত্র অ্যাডাম অস্টেন।

‘আমরা মানবিক সহায়তা ও মিয়ানমারের জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এবং আন্তর্জাতিক মহলে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করে রোহিঙ্গাদের সমর্থন জানিয়ে যাব,’ বলেন অস্টেন। মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সু চির ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯১ সালে তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়।

গত মাসে প্রকাশিত এক জাতিসংঘ প্রতিবেদনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার হওয়া দরকার।

Bootstrap Image Preview