Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

'প্রধানমন্ত্রী সবাইকে দেখে, আমাকেও যেন দেখেন'

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩৯ PM
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩৯ PM

bdmorning Image Preview


মজনু মোল্লা। ফরিদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ ভক্ত। যিনি বঙ্গবন্ধুর সরাসরি সান্নিধ্যও লাভ করেছেন। ছিলেন ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দির ঐতিহাসিক ময়দানেও। সত্তরের দশকে যখন ১০ গ্রামে খুঁজেও একজন পঞ্চমশ্রেণী পাশ খুঁজে পাওয়া যেত না, তখন তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেছিলেন। বাবা ছিলেন কেরানী। এলাকায় খুব নামডাক ছিল। সকাল থেকে রাত অবধি বাড়িতে থাকতো বিশিষ্ট জনের আনাগোনা।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, আজ তাকেই অন্যের বাড়ি থাকতে হয়। নেই কোন বেঁচে থাকার সম্বল। অবলম্বন বলতে কেবল দুই ছেলে। তারাও তাদের মাকে হারিয়েছে কয়েক বছর হল।

ভাগ্য পরিবর্তনে আশির দশকে বাড়ি ছাড়েন মজনু মোল্লা। কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। উল্টা এ বছর গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখেন, তার বলতে আর কিছুই নেই। সবই বেদখল করেছে তার পরিজন। এমনকি বাপের ভিটেমাটিতেও তার কোন অধিকার নেই! বাড়ি ছাড়তে হয় তাকে। গত দুমাস ধরে এখানে ওখানে, কখনো মসজিদে,কখনো খোলা আকাশের নিচে।

কেউ এগিয়ে আসেনি। অবশেষে গত বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন ফরিদপুরের উচ্চমাধ্যমিক পড়া একজন শিক্ষার্থী। বিষয়টি নজরে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি শেখ স্বাধীন মোঃ শাহেদের। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পোস্ট দাতার সাথে যোগাযোগ করেন। পোস্ট দাতাকে বলেন তার নিজের বাড়িতে মজনু মোল্লাকে নিয়ে আসতে। সেদিন রাত তার বাড়িতেই ঘুমান মজনু। অতঃপর আজ থেকে মজনু মোল্লার স্থান হয়েছে শেখ স্বাধীন মোঃ শাহেদ কর্তৃক ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মাচ্চর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ (প্রস্তাবিত) কার্যালয়। যতদিন পর্যন্ত মজনুর স্থায়ী আবাসন না করে দিতে পারেন,ততদিন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়েই থাকবেন বলে শেখ শাহেদ নিশ্চয়তা দেন।

এ প্রসঙ্গে শেখ শাহেদ বলেন, " শেখ হাসিনার বাংলায় কেও গৃহহীন থাকতে পারেনা। কার্যালয়ে বসে কেবল আলোচনা করলাম,কিন্তু দেশের লোক রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে তাহলে ঐ ভাবনার উপকারিতা কি? কার্যালয়ে তিনটা রুম, উনি থাকুক একটায়। অন্যগুলিতে দলীয় কাজ চলুক।"

এদিকে মজনু মোল্লার বিষয়টি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে অবগত করান শেখ শাহেদ। তিনি মজনু মোল্লাকে একটি বাড়ি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

মজনু মোল্লা নিজের আবেগ প্রকাশ করে বলেন "সারাজীবন আওয়ামী লীগ করেছি। আজ জীবন শেষে জায়গা হয়েছে এই আওয়ামীলীগের ই ঘরে। আমি হাজার কষ্টেও তাই হাসছি। তবে আমি এভাবে থাকতে চাইনা। শেখের বেটি সবাইকে দেখে। আমাকে যেন দেখেন। আমার তো আর সে ছাড়া যাওয়ার জায়গা নাই!"

Bootstrap Image Preview