Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চীনের ঘরের শত্রুর কাছে সামরিক রসদ বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:২২ AM
আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:২২ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


তাইওয়ানের কাছে ৩৩ কোটি ডলারের সামরিক রসদ বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব রসদের মধ্যে এফ-১৬ জঙ্গিবিমানের খুচরা যন্ত্রাংশ, সি-১৩০ কার্গো বিমান ও অন্যান্য সামরিক আকাশযান রয়েছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। সোমবার চীনের ২০ হাজার কোটি ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক কার্যকরের দিনই তাইওয়ানকে অস্ত্র বিক্রির এ অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বেইজিংকে চাপে ফেলতে তাদের ঘরের শত্র“ তাইওয়ানকে এসব রসদ দিচ্ছে ওয়াশিংটন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।

পেন্টাগনের ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই বিক্রয় প্রস্তাব ক্রয়কারীর (তাইওয়ান) নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তায় অবদান রাখবে। তারা ওই অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামরিক ভারসাম্য ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে কাজ করছে।’ ৩৩ কোটি ডলারের সামরিক রসদের মধ্যে এফ-১৬, সি-১৩০, এফ-৫, আইডিএফ জঙ্গিবিমানের পাশাপাশি অন্যান্য আকাশযান সিস্টেম ও সাবসিস্টেম এবং লজিস্টিক ও প্রোগ্রাম সাপোর্ট সম্পর্কিত রসদ রয়েছে।

প্রস্তাবিত বিক্রয়ের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। এ বিষয়ে আপত্তি তোলার জন্য কংগ্রেস ৩০ দিন সময় পাবে। এই বিক্রয় প্রস্তাবে ওই অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্যের বদল ঘটবে না। তবে এসব রসদ তাইওয়ানের ‘প্রতিরক্ষা ও বিমানবহর’ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন হবে বলে দাবি করেছে পেন্টাগন। এ পর্যায়ে তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ক্রয়ের বিস্তারিত খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতে হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তাদের সমর্থন দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট দফতর। এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট দফতর বলেছে, তারা নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ‘নিবিড় যোগাযোগ ও সহযোগিতা বজায় রেখে’ চলবে। তবে এ সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন।

মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেন, ‘তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন আন্তর্জাতিক আইনের ভয়ঙ্কর লঙ্ঘন। এটি চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থের ক্ষেত্রে চরম আঘাত। চীন কঠোরভাবে এ অস্ত্র বিক্রির অনুমোদনের নিন্দা জানাচ্ছে।’ তাইওয়ানের সঙ্গে এ সামরিক চুক্তি বাতিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শুয়াং।

তাইওয়ানকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। স্বশাসিত এই দ্বীপ ভূখণ্ডটির কাছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক রসদ বিক্রি দীর্ঘদিন ধরে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টির একটি কারণ হিসেবে বিরাজ করছে।

মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই মূলত তাইওয়ান নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। নতুন যুদ্ধবিমানসহ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আরও অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের চাহিদা জানিয়ে আসছে দ্বীপটি। তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য নিয়ে চীনের মধ্যে গভীর সন্দেহ বিরাজ করছে।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে শক্তির ভারসাম্য বেইজিংয়ের দিকে ঝুঁকে আছে। তাইওয়ানের সাহায্যে মার্কিন বাহিনী দ্রুত এগিয়ে না এলে চীন সম্ভবত দ্বীপটিকে সহজেই গ্রাস করে নিতে পারবে।

Bootstrap Image Preview