অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ের মধ্যে বসে থাকা ভারতের কাছে সুখবর নিয়ে এলো মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন ভোটে হেরেছেন। চীনের জন্য দরজা খুলে অনেকটা ঘোষণা দিয়েই ভারতের সঙ্গে পাঞ্জা কষছিলেন তিনি। তার পরাজয়ে উচ্ছ্বাস গোপন করেনি নয়াদিল্লি।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোন করে অভিনন্দন জানান প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী প্রার্থী ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহকে। এর আগে ভোরেই তাকে অভিনন্দন জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোলিহকে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মূল্য এবং আইনের শাসনের প্রতি মালদ্বীপবাসীদের সুদৃঢ় দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা করল এ নির্বাচন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিবেশীকে অগ্রাধিকার দেয়ার ভারতীয় নীতি মেনে মালদ্বীপের সঙ্গে সহযোগিতা ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও গভীর করতে আমরা উদ্গ্রীব।
পরে মোদিও একই কথা জানান সোলিহকে। মালদ্বীপের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চান বলে জানিয়েছেন।
ইয়ামিন আমলে মালদ্বীপ বারবার ভারতের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে। ভারতের দুটি সামরিক হেলিকপ্টার ফিরিয়ে নেয়ার জন্য প্রবল চাপ তৈরি করেছিলেন ইয়ামিন। সেখানে উপস্থিত ৫০ জন ভারতীয় সেনাকর্মীকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য কার্যত ফতোয়া জারি করেছিল ইয়ামিন সরকার।
২৫ বছরের সাংসদ সোলিহর সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা দীর্ঘদিনের। তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ক্রমশ পরিস্থিতি ভারতের অনুকূলে যাবে বলে আশা করছে নয়াদিল্লি।
সোলিহ তার প্রচারে বারবার বলে এসেছেন, ক্ষমতায় এলে প্রতিবেশী দেশগুলোকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হবে। বিদেশনীতিতে অগ্রাধিকার পাবে ভারত, চীন নয়।
ইয়ামিনের অভিযোগ ছিল, ভারত গোপনে সোলিহকে সাহায্য করছে। তবে ইয়ামিন ফের জিতে এলে ভারতের জন্য উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ ছিল বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
ইয়ামিনের আমলে মালদ্বীপে বিশাল এলাকাজুড়ে সামরিকঘাঁটি তৈরির প্রক্রিয়া বেইজিং অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেছে।
যে মালদ্বীপে ২০১১ সাল পর্যন্ত চীনের দূতাবাসও ছিল না, আজ সেখানকার রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রতিটি পদক্ষেপে জড়িয়ে রয়েছে তারা।
গত ডিসেম্বরে ভারতকে ক্ষেপিয়ে মালদ্বীপের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করেছে চীন। সে দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতীয় সংস্থাকে হটিয়ে চীনা সংস্থাগুলো জায়গা করে নিয়েছে।
ইয়ামিনের পরাজয় তাই ভারত-চীন কূটনৈতিক যুদ্ধে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নয়াদিল্লিকে অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দিল বলে মনে করছে ভারত।