Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মাত্র ৩ বছরেই বিশ্বকে নাড়িয়ে দিল বাংলাদেশি শিশু, স্বীকৃতি দিলো হার্ভার্ড!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৪ PM
আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


মাত্র ছয় বছর বয়সে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেল সুবর্ণ আইজ্যাক। চলতি মাসের শুরুতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. ডিল গিলপিন ফাউস্টের কাছ থেকে স্বীকৃতি পায় সুবর্ণ। এবারই প্রথম বিশ্বের শীর্ষ এই বিশ্ববিদ্যালয় ছয় বছরের একটি ছেলেকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

মাত্র দেড় বছর বয়সেই তাক লাগিয়ে দেয় সুবর্ণ। ওই বয়সেই রসায়নের পর্যায় সারণি তথা কেমিস্ট্রি পিরিয়ডিক টেবিল মুখস্ত করে ফেলে। তার বয়স যখন তিন, তখন লেবুর সাহায্যে ব্যাটারি এক্সপেরিমেন্ট করে। আর সাড়ে তিন বছর বয়সে বিখ্যাত একটি কলেজের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের আমন্ত্রণও পেয়ে যায় সে।

এখানেই শেষ নয়, ২০১৫ সালে পিএইচডি স্তরের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন সমস্যা সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছিল সুবর্ণ। এর আগে ২০১৪ সালে নিউ ইয়র্কের সিটি কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. লিসা কোইকো সুবর্ণকে ‘আমাদের সময়ের আইনস্টাইন’ নামে অভিহিত করেন।

এইটুকু বয়সে এতসব কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়েই চলতি বছরের ২ মে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. ডিল গিলপিন ফাউস্টের কাছ থেকে স্বীকৃতি পায় সুবর্ণ। ইতোমধ্যে ভয়েস অব আমেরিকাসহ বিশ্বের শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোতে তার সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে।

সুবর্ণর বাবা রাশীদুল বারীর পৈত্রিক নিবাস চট্টগ্রামে। তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কস কমিউনিটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের ওপর পিএইচডি করছেন। রাশীদুলের স্ত্রী শাহেদা বারী ব্রঙ্কস কমিউনিটি কলেজ থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল এই দম্পতির কোল আলো করে পৃথিবীতে আসে সুবর্ণ।

মাত্র দেড় বছর বয়স থেকেই সুবর্ণ জানান দিতে থাকে তার অনন্য মেধার। বাবা রাশীদুলের ভাষ্য, হঠাৎ করেই একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে সুবর্ণ। সে সময় তার বয়স দেড় বছর। জ্বর বেশি হওয়ায় নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এ সময় বাবা ছেলেকে সান্তনা দেওয়ার জন্যই বলছিলেন, ‘আই লাভ ইউ মোর দ্যান এনিথিং ইন দ্য ইউনিভার্স।’ সুবর্ণ তার বাবাকে পাল্টা প্রশ্ন করে, ‘ইউনিভার্স অর মাল্টিভার্স?’ ছেলের মুখে পাল্টা প্রশ্ন শুনে চমকে যান বাবা রাশীদুল।

তখনো রাশীদুল জানতেন না সুবর্ণ তিন বছর বয়সে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে দক্ষতা দেখিয়ে সারা পৃথিবীকে নাড়িয়ে দেবে। আরও একটি ঘটনা জানা যায় বাবা রাশেদুলের কাছ থেকে। মা একদিন সুবর্ণকে গণিত শেখাচ্ছিলেন। হঠাৎ সুবর্ণ প্রশ্ন করে বলে, ‘ইফ ওয়ান প্লাস ওয়ান ইকুয়াল টু টু, দ্যান টু প্লাস টু ইকুয়াল টু ফোর অ্যান্ড এন+এন ইকুয়াল টু টুএন, ইজন্ট ইট?’ বাবা রাশীদুল তখন পাশের রুমে তার ছাত্রদের পরীক্ষার খাতা দেখছিলেন।

ছেলের এমন প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞান শেখাতে শুরু করেন বাবা। আর এভাবেই মাত্র দুই বছর বয়সে সে রসায়নের পিরিয়ডিক টেবিল মুখস্ত করে ফেলে। এ অবিশ্বাস্য কথাটি সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। এই বিস্ময়কর প্রতিভার কথা জানতে পারেন মেডগার এভার্স কলেজের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড পোজম্যান। তিনি সুবর্ণর মেধা যাচাই করতে চান।

সুবর্ণ পর্যায় সারণির সব এলিমেন্ট বলে পোজম্যানকে অবাক করে দেয়। এরপর তার ডাক পড়ে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগ থেকে। সেখানে সাবরিনা চোধুরী ডোনা তার ইন্টারভিউ নেন। বছরের সেরা কনিষ্ঠ ইন্টারভিউ হিসেবে তারা এটা বাছাই করে।

সুবর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হইচই ফেলে দিয়েছে। তার বিষয়ে বাবা রাশেদুল বারী জানান, সুবর্ণ এখন মিলটন ফেইন স্কুলের গিফটেড অ্যান্ড ট্যালেন্টেড প্রোগ্রামের ছাত্র। বয়স কম হলেও বড়দের অঙ্ক কষতে পারে সুবর্ণ। তার বাবার গণিতের ভুল ধরে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম নামী ব্রুকলিন টেকে পড়া ১৫ বছর বয়সী বড় ভাইয়ের ভুলও ধরে সে। এ ছাড়াও সে ইউটিউবসহ অন্যান্য অঙ্কেও ভুল ধরে।

নিজের পঞ্চম জন্মদিনে সুবর্ণ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছ থেকে উপহার পেয়েছে। এমনকি জাতিসংঘের সপ্তম মহাসচিব কফি আনানের কাছে থেকে একটি চিঠি পেয়েছে, যাকে তার বাবা ‘ঐতিহাসিক’ বলে আখ্যায়িত করেছে। বর্তমানে সুবর্ণ বেশ কয়েকটি প্রকল্পে কাজ করছে। এগুলোর মধ্যে রোবট তৈরি ও বই লেখার মতো বিষয় রয়েছে।

বাবা রাশেদুল বারী জানান, তার ছেলের এই সাফল্যে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ভীষণ খুশী। তার ভাই রিফাত বারী সপ্তম গ্রেডে পড়ছে। সে সাতটি ভাষায় কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে অভ্যস্ত।

Bootstrap Image Preview