Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

এমপি রনজিৎ কুমারের বিরুদ্ধে স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:২৬ PM
আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:২৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


যশোর-৪ আসনের এমপি রনজিৎ কুমার রায়ের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে জামাত-বিএনপি ও দলীয় লোক নিয়োগ দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

রবিবার(২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ) এর সাগর -রুমি মিলনায়তন এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, দহাখোলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোতালেব তরফদা।

তারা দাবি করেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে মপি রনজিৎ রায় কুমার টাকার নেশায় মগ্ন হয়ে পড়েছেন। দলীয় কমিটি এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে অন্তত দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে অযোগ্য অদক্ষ লোক বসিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।

কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে বাধার অভিযোগ এনে তারা বলেন, ২০০৪ সালে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হবার পর থেকেই নিজেস্ব লোক দিয়ে পকেট কমিটি বানিয়ে রেখে আজ পর্যন্ত কোন বর্ধিত সভা করারও প্রয়োজন মনে করেনি। তার মতের বিরুদ্ধে গেলেই তাকে হামলা-মামলা দিয়ে নির্যাতিত করার অনেক প্রমাণ মিলবে আমাদের নির্বাচনী এলাকায়।

অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা ওলিয়ারের হত্যার পিছিনে তার মদদ আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন।

টাকার বিনিময় নিয়োগ দেয়া তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে মোতালেব তরফদার বলেন, উপজেলা জামায়াতের রোকন আব্দুল মতিনকে বাঘারপাড়া ডিগ্রী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ হিসেবে ২২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আজিজুর রহমানকে হাবুল্ল্যা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। রায়পুর কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামানকে। ধলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমানকে। আগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন বিএনপি নেতা হুমায়ন কবিরকে। ছাতিয়ানতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শহীদুলকে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, অভয়নগর উপজেলা জামাতের আমীর মাওঃ আঃ আজিজের কন্যা মহাছিনা খাতুনকে ২২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাঘারপাড়া উপজেলা খাজুরা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া আমীর সাহেবের আপন ভাই আঃ হকের কন্যা নাঈমা আক্তার কে চেঙ্গুটিয়া বি সি সি মুজাদিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হিসাবে ১৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ-প্রহরীর নিয়োগে দুই উপজেলা থেকে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। আওয়ামী লীগের কর্মী সাত-আট লাখ টাকা দিয়ে এই চাকুরী নিতে হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রণজিৎ কুমার রায় ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। তখন তিনি নির্বাচনী হলফনামায় স্থাবর ও আস্থাবর সম্পদের বিবরণ প্রদাণ করেন। বিবরণে পৈত্রিক ৪ বিঘা কৃষি জমি, ৪ শতক জমির উপর তেলিধান পূজা মৌজায় একটি টিনের ঘর, ছেলে ও স্ত্রী নামে ব্যাংক ব্যালেন্স ও জমি নাই। এখন ১০ বৎসর তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে কিভাবে আকাশ ছোয়া সম্পদের মালিক হলেন।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, তার নামে যশোর রেল রোডে ৫ তলা একটি ও ৩ তলা একটি, যশোর লোহাপট্টিতে ১ টি, যশোর নিউ মার্কেটে ২ টি, বাঘারপাড়া উপজেলাতে ২য় তলা ১ টি, খাজুরা বাজারে ৪ তলা ১ টি, ঢাকায় মিরপুর দারুস সালাম রোডে ২ টি বাড়ি, ছেলেদের নামে ভারতে সল্ট লেগে ও বাড়াসাতে ২ টি বাড়ি, বাঘারপাড়া ও চৌগাছার উপজেলায় ২২৫ একর জমি ক্রয় করেছেন। খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ৫০ একর জমির উপর মৎস্য ঘের ক্রয় করেছেন। নিজে পাজেরো গাড়িতে চড়েন মূল্য ১ কোটি টাকা, দুই ছেলে ২ টা গাড়ির মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা, স্ত্রী ১ টি গাড়িতে চড়েন মূল্য ৩০ লক্ষ টাকা, স্ত্রীর নামে ট্রাক কাভারভ্যান ১০ টি আছে যার মূল্য ৫ কোটি টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আতিয়ার রহমান সরদার, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য আজগর আলী, ১নং ইউনিয়নের চেয়রম্যান দিল পাটুয়ারী, বাসুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরদার, জামদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম টুটুল, বন্দোবিলা ইউপি চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান, বাঘার পাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ: রউফ মোল্যা, বাঘারপাড়া যুবলীগের সাবেক নেতা মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, সাইফুজ্জামান ভোলা, মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজ, বাবলু কুমার সাহা, ইমদাদ হোসেন, বাঘারপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বায়োজিদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বিএম শাহাজালালা, দরাজ হাটের জালালা উদ্দীন।

 

Bootstrap Image Preview