চোখের আলো হারিয়ে দৃষ্টিহীন ব্যবসায়ীকে মামলা তুলে নিতে বাড়িতে চিরকুট পাঠিয়ে হুমকি দিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া (২২)।
মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের চাপারতল গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। হাবিব মিয়াকে সবাই মাদক কারবারী বলে চিনেন । তার নামে কালীগঞ্জ ও গংগাচওড়া থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কাকিনা চাপারতল এলাকার মৃত হাসান আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম শিপু ও মাঈদুল ইসলাম শিপন চাপারতল বাজারে বিকাশের ব্যবসা পরিচালনা করে সংসার পরিচালনা করতেন। ঈদের আগে মোটা অংকের টাকার লেনদেন হতো। হাবিব মিয়ার চোখ পড়ে মোবাইল অনলাইন ব্যাংকিং টাকার উপর। এমনকি এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিরোধ তৈরী হয় মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়ার।
গত ৩০ আগষ্ট রাত ১১টার দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একা ছিলেন জাহেদুল ইসলাম শিপু। এ সুযোগে জাহিদুল ইসলাম শিপু ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে পুর্ব বিরোধের জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া ৩/৪ জন সন্ত্রাসীসহ শিপুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এরপর হাবিবসহ সন্ত্রাসীরা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দুই লক্ষ ৫০ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
শিপুর চিৎকারে স্থানীয়রা এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য শিপুকে ঢাকায় নেয়া হলেও চিকিৎসকরা তার চোখের আলো ফিরাতে পারেননি। বর্তমানে শিপু চোখের আলো ফেরাতে ভারতে চিকিৎসা করার চেষ্টা করছে।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই আহত শিপুর ভাই মাঈদুল ইসলাম শিপন বাদী হয়ে মাদক ব্যবসায়ী হাবিব মিয়াসহ অজ্ঞতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে এলাকায় প্রক্যাশে আসামি ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ হাবিবকে গ্রেফতার করেনি বলে বাদীর অভিযোগ।
সরেজমিনে জানা যায়, হাবিবের অত্যাচারে এলাকার বেশির ভাগ পরিবার অতিষ্ঠ। জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ী হাবিব এলাকার নারীদের উপড় আকৃষ্ট ছিল। রাতের বেলা ওই এলাকার নারীরা তার ভয়ে বাহিরে আসতেন না।
আহত ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম শিপু বলেন, টাকা নিয়েছে কষ্ট নেই। সারা জীবনের জন্য বাম চোখের আলো হারালাম। তবুও সন্ত্রাসী হাবিবকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। বরং উল্টো হাবিবের লোকজন বাড়ির গেটে চিরকুট লিখে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। চোখের পর এবার জীবন ও পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মামলার তদন্ত কমকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপ পরিদশক(এসআই) কামাল উদ্দিন বলেন, আসামি হাবিবের ব্যবহৃত ফোন নম্বর বাদি ম্যানেজ করে দিয়েছেন। কিন্তু সিডিআর নেয়া হচ্ছে না। তবে খুব দ্রুত তাকে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তিনি।
কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মকবুল হোসেন বাদির অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ঘটনাস্থল ঘুরে এসে মামলা নিয়েছেন তিনি। আসামিরা গ্রাম ছাড়া হওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।