Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কারিগরদের সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২২, ০৪:৫৫ PM
আপডেট: ১৪ জুন ২০২২, ০৪:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


পদ্মা সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা তুলে ধরে শামসুল আলম বলেন, পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবার সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত যন্ত্র-যন্ত্রাংশ দিয়ে ফরিদপুরে ভাঙ্গা অংশে একটি জাদুঘর নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি বাদ দিলে মূল খরচ দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামীতে হাওড় অঞ্চলের সব সড়ক এলিভেটেড বা উড়ালসড়ক নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হাওড়ের সড়কে ছোট কালভার্ট নির্মাণ না করে বড় ব্রিজ করারও নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, হাওড় এলাকায় ভবিষ্যতে যে সড়ক হবে সেগুলো উড়ালসড়ক করা হবে। পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে কালভার্টের পরিবর্তে ব্রিজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।  

একনেকের সভায় ১০ হাজার ৮৫৫ কোটি ৬০ লাখ ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ১৪২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, আগামী ২৬ জুন সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে।

তিনি বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস, বিশ্বব্যাংকসহ সব বিরোধীকেই আমন্ত্রণ জানাবে সরকার।

আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরায় হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এরপর মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষ্যে ওই এলাকায় ১০ লাখ মানুষের জমায়েত করার পরিকল্পনা করেছে আওয়ামী লীগ।

পদ্মা সেতুর মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সারা দেশে একযোগে দেখানোর ব্যবস্থা করতে ১ জুন সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পাশাপাশি অন্য সাত জেলায়ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর জন্য বলা হয়েছে। একই দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি জেলাগুলোতে একদিনের জন্য অনুষ্ঠান পালন করতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জেলা চাইলে একাধিক দিনও অনুষ্ঠান করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর স্ট্রিট লাইটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সাত দিনে পর্যায়ক্রমে ৪১৫টি লাইট জ্বালানো হয়। সেতু উদ্বোধনের দুই সপ্তাহ আগেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় স্বস্তিতে কর্তৃপক্ষ। তবে চোখ ধাঁধানো পদ্মা সেতুর আর্কিটেকচারাল লাইটিং স্থাপন হবে উদ্বোধনের পর। সড়কপথের লাইটিং রাতের বেলায় সেতুকে দিনের মতো আলোকিত রাখবে।

পদ্মা সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে ৪১৫টি। এ ছাড়া দুপাড়ের সংযোগ সড়কে বসেছে ২০০টি ল্যাম্পপোস্ট। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে ৮০ কিলোওয়াটসম্পন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। সেতুর দুই প্রান্তের সাবস্টেশন থেকে এসব ল্যাম্পপোস্টে দেয়া হবে বিদ্যুৎ সংযোগ।

পদ্মা সেতু দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেলসেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।

দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়। ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের এ সেতু।

খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার দিন যতই এগিয়ে আসছে, সম্ভাবনা আর প্রত্যাশার নতুন দিকও তত উন্মোচিত হচ্ছে।

Bootstrap Image Preview