বাংলাদেশে ২০০২ সালের পর থেকে মার্সিডিজ-বেঞ্জের গাড়ি আসতে শুরু করে। এ পর্যন্ত কোম্পানিটির বিভিন্ন মডেলের প্রায় ১৪০০ গাড়ি দেশে এসেছে। চলমান এই গাড়িগুলোতে কোনো ধরনের ত্রুটি নেই। সম্প্রতি ব্রেকিং ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০ লাখ পুরনো গাড়ি প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে জার্মান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মার্সিডিজ-বেঞ্জ। জার্মান পরিবহন কর্তৃপক্ষ মারফত জানা গেছে, মার্সিডিজ-বেঞ্জ তার পুরনো ML এবং GL SUVগুলির পাশাপাশি ২০০৪ থেকে ২০১৫ এর মধ্যে বিক্রি হওয়া জ-Class MPVগুলো বিশ্বব্যাপী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। তবে বাংলাদেশে এসব মডেলের গাড়ির সংখ্যা খুবই কম। যা আছে তা ত্রুটিমুক্তভাবে চলছে। বাংলাদেশের মার্সিডিজ-বেঞ্জ কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০০২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মার্সিডিজ- বেঞ্জের বিভিন্ন মডেলের ১৩০০ থেকে ১৪০০ গাড়ি বাংলাদেশে রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির R-Class MPV মডেলের একটি গাড়িও বাংলাদেশে আসেনি।
শুধু ML মডেলের ৫-৬ টা গাড়ি বাংলাদেশে চলছে। এই গাড়িগুলোতে এখন পর্যন্ত কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি।
আর GL SUV মডেলের গাড়ি বর্তমানে GLS মডেল নামকরণ হয়েছে। এই মডেলের বাংলাদেশে এসেছে ২০১৯ সালের পর থেকে। বর্তমানে দেশে ১৫০-২০০ টি এখঝ মডেলের গাড়ি রয়েছে। মার্সিডিজ-বেঞ্জ বাংলাদেশের ডেপুটি ম্যানেজার ফয়সাল আহমেদ বলেন, ২০১৫তে গখ এবং এখ এর ট্যাক্স ছিল ৬৫০ শতাংশ। এই মডেলের একটা গাড়ির দাম পড়তো চার কোটি টাকার বেশি। তাই কেউ অর্ডার না করলে আমরা আমদানি করতাম না। আমাদের গাড়িগুলো সব সময় দেড় কোটি টাকার নিচে ছিল। এজন্য এই গাড়ি আমাদের দেশে ৫-৬টা আছে। ট্যাক্সের কারণে গাড়ির দাম অনেক বেশি। আমরা বেশির ভাগ ই-ক্লাস, সি-ক্লাস গাড়ি বিক্রি করি। এগুলো প্রাইভেট কারের মতো।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে গাড়িগুলো নিয়মিত চেকআপ হয়। মেশিনে চেকআপ করার সময় কোনো ত্রুটি থাকলে তা ধরা পড়ে। আর এই রিপোর্টগুলো সার্ভারে জমা হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত এই গাড়িগুলোর মধ্যে কোনোটিতেই ত্রুটি ধরা পড়েনি। মার্সিডিজ জানায়, বিশ্বজুড়ে প্রত্যাহারকৃত গাড়িগুলোর সম্ভাব্য ব্রেক-ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হবে এবং প্রয়োজনে যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হবে। মার্সিডিজ-এর এই সিদ্ধান্তের জন্য গাড়ি বাজার প্রভাবিত হবে কিনা তা এই মুহূর্তে স্পষ্ট নয়। বিশ্বে মোট ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৪০৭টি গাড়ি প্রত্যাহার করা হবে। এর মধ্যে জার্মানিতেই রয়েছে ৭০ হাজার গাড়ি।
জরুরি কল-ব্যবস্থায় নিরাপত্তা ইস্যুর কারণে গত বছরও মার্সিডিজ প্রায় সমানসংখ্যক গাড়ি প্রত্যাহার করে। জার্মান পরিবহন কর্তৃপক্ষ কেবিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, গাড়িগুলো যদি এখনই তুলে না নেয়া হয় তবে ব্রেক বুস্টারের ক্ষতি হতে পারে, ব্রেক প্যাডেল এবং ব্রেকিং সিস্টেমের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। মার্সিডিজ-বেঞ্জ গ্রুপ এজি বলেছে, সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে গাড়িগুলোর মালিকদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা হবে। যতক্ষণ না পুরো যন্ত্রাংশ বদলানো হচ্ছে ততক্ষণ এই গাড়িগুলোর মালিকদের ড্রাইভ না করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এর আগেও মার্সিডিজ-বেঞ্জ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিক্রি হওয়া প্রায় ১.৩ মিলিয়ন গাড়ি প্রত্যাহার করে, তখন গাড়ির জরুরি কল সিস্টেমে ত্রুটি ধরা পড়েছিল। পরে সেই ত্রুটি সংশোধন করা হয়।