বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। সবকিছু ঠিকটাক থাকলে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে প্রস্তুত করা হয়েছে ট্রানজিট ক্যাম্প। একইভাবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকেও সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তারা।
ঘুমধুম সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ১৫০ রোহিঙ্গা মিয়ানমার যাবে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য মো. আবুল কালাম।
বুধবার বিকাল ৫টার দিকে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
আবুল কালাম জানান, সবকিছুর প্রস্তুতি শেষ। বৃহস্পতিবারই প্রত্যাবাসন শুরু হবে। ৩০ পরিবারের ১৫০ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে যাবে। দুপুরের দিকে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের ঘুমধুমের ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাব। সেখান থেকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করবেন। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ধারাবাহিকভাবে চলবে।
জানা যায়, প্রথম ধাপে ৩০ পরিবারের ১৫০ জন রোহিঙ্গা যথাসময়ে বান্দরবানের ঘুমধুম পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রত্যাবাসনের অন্তর্ভুক্ত ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গার তালিকা জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় রোহিঙ্গাদের পরিবারভিত্তিক তালিকা মিয়ানমার সরকারের হাতে তুলে দেন শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার। এতে প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গার নামের তালিকা রয়েছে। এসব তালিকা যাচাই-বাছাই করে মিয়ানমার প্রথম দফায় ৫ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার কথা দেন মিয়ানমার। যাদের মধ্য থেকে প্রথম দফায় ২ হাজার ২৬০ জনকে ফেরত নিচ্ছে। প্রতিদিন ১৫০ জন করে ১৫ দিন এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে টেকনাফ নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পের ইনচার্জ আবদুল হান্নান জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরসহ বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাসহ এখন উখিয়া ও টেকনাফ আশ্রয় শিবিরে অবস্থান নিয়েছে প্রায় ১১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা।