Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘মাইন্ড ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ’ সিইসিকে বললেন মান্না

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৫৮ PM
আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৫৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের ফলাফল জেনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন জোটের নেতারা।

আজ সোমবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে এই অনুরোধ জানিয়েছে।

ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। পরে ইসি সচিবও সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনারদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।

ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বর্তমান ইসির ওপর মানুষের আস্থা নেই বলে মন্তব্য করলে উত্তরে একজন কমিশনার বলেন, রাজনীতিবিদদের ওপর মানুষের আস্থা নেই।

তবে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়নি, গলার আওয়াজ উচ্চস্বরে ছিল বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ।

বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার দাবি জানানো হয়। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনার শাহাদত হোসেন বলেন, ইভিএম মেশিন না দেখেই মন্তব্য করা হচ্ছে। ইভিএমে কারচুপি করা সম্ভব না। তিনি ঐক্যফ্রন্টকে উদ্দেশে করে বলেন, প্রয়োজনে আপনারা টেকনিক্যাল লোকদের দিয়ে যাচাই করেন।

এ পর্যায়ে মান্না বলেন, আমি নিশ্চিত করে বলছি ইভিএমে ম্যানুপুলেট (কারসাজি) করা সম্ভব। তিনি বলেন, আমরা এখনে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানাতে আসিনি। যদিও জনগণের আপনাদের ওপর আস্থা নেই।

এ সময় কমিশনার শাহাদাত হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও তো জনগণের আস্থা নেই।

মান্নার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, আপনারা বড় বড় কথা বলেন.....

সিইসির বক্তব্য শেষ করতে না দিয়েই মান্না বলেন, ‘মাইন্ড ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ।’

বিকাল ৪টায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি (জেএসডি) আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আলোচনার জন্য নির্বাচন কমিশনে যায়। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল পেছানো, বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন, ইভিএম বাতিল এবং ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয় নিয়ে সেখানে ইসির সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা আলোচনা করেন।

সভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মো. মনসুর অতীত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘নির্বাচনের আগের দিন পুলিশ বিরোধী দলের এজেন্টদের আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। ইসি কিছু করতে পারেনি। ফলে আপনাদের দিয়ে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে?

বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে আ স ম আবদুর রব ছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মনসুর, বরকতুল্লাহ বুলু ও নঈম জাহাঙ্গীর।

অন্যদিকে ইসির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে কমিশনার মাহবুব তালুকদার, কবিতা খানম, রফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। আর ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জাসদ জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকতুল্লাহ বুলু, ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মনসুর, ও নঈম জাহাঙ্গীর।

উল্লেখ্য, এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল পেছাতে শনিবার ইসিকে চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যদিও একইদিন কমিশন বৈঠক শেষে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ৮ নভেম্বর দিন ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন। ওইদিন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন সিইসি কেএম নূরুল হুদা।

এদিকে রবিবার নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, 'আজকেই (৪ নভেম্বর) আমাদের তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত ছিল। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ৮ তারিখ তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই আমরা ৪ তারিখের পরিবর্তে ৮ তারিখে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই দিন অপরাহ্নে কোনো এক সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করবেন।'

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের দ্বিতীয় সংলাপ আগামী বুধবার (৭ নভেম্বর) হতে যাচ্ছে। ওই দিন বেলা ১১টায় গণভবনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

অপরদিকে সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর থেকে নির্বাচনকালীন ক্ষণ-গণনা শুরু হয়েছে। তবে ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। এজন্য ১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি জানিয়েছে ইসি।

Bootstrap Image Preview