ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ। এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন ইমদাদুল হক ও সহকারী প্রক্টর মাকসুদুর রহমানের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে তদন্ত কমিটির পর্যালোচনা নিয়ে একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ।
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, তদন্ত কমিটির এমন প্রতিবেদন সত্ত্বেও ফল ঘোষণা করেছে ঢাবি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরও কেন ফল ঘোষণা করা হলো এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে উপাচার্য মনে করেছেন যে ফল প্রকাশ করতে কোনো সমস্যা নেই, তাই তিনি ফল ঘোষণা করেছেন।‘
তিনি বলেন, ‘একজন প্রশ্ন ফাঁসকারীর তথ্য পাওয়া গেছে এবং তা দিয়েছেন সাংবাদিকরা। এর পরেই আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। প্রশ্ন ফাঁস আর ডিজিটাল জালিয়াতি যাই বলি না কেন, পরীক্ষা শুরুর আগেই আমাদের হাতে কিছু উত্তর চলে এসেছে, সত্য প্রকাশ হবেই। ধামাচাপা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমি চাই পুরো ব্যাপারটিই প্রকাশিত হোক।’
এর আগে গতকাল প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এরকম ঘটনা (প্রশ্ন ফাঁস) আগেও ঘটত, তখন ব্যবস্থা নেওয়া হত না, এখন হচ্ছে।‘ মূলত তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কথাই স্বীকার করেই নেন তিনি।
উপ-উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে ৮১টি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছিলেন। পরে কোনো একটি কেন্দ্র থেকে হয়তো কেউ ছবি তুলে তা অন্যের কাছে পাঠিয়ে দেয়। সে কাজটি আমি, আপনি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যে কারো দ্বারাই হতে পারে। ফলে ওই ৮১টি কেন্দ্রের কোনটি থেকে প্রশ্ন ফাঁস হলো তা বের করা কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান অনুষদের ‘ক’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার সময়ও আমরা ডিজিটাল জালিয়াতকারী পাঁচ জনকে ডিভাইসসহ ধরেছি এবং পুলিশে দিয়েছি। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সহায়তা নিয়ে ঠিক কতজন ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ফলে এক লাখের মতো পরীক্ষার্থীর বৃহত্তর কল্যাণের বিষয়টি চিন্তা করে আপাতত ফল দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যত দ্রুত আমরা প্রশ্ন ফাঁসের মূল সূত্র উদঘাটন করতে পারব, তত দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে, ভর্তি বাতিল করে অপেক্ষমাণ মেধাবীদের সুযোগ দেওয়া যাবে। ব্যাপারটি এখন পুরোটাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তের ওপর নির্ভর করছে।’