ইন্টারনেটের অপব্যবহার বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা জন্য হুমকি উল্লেখ করে তার সমাধানে জাতিসংঘকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে 'সাইবার নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা' বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের সাইডলাইন বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইবার জগতে সেই অর্থে কোনো সীমারেখা নেই। তথ্য-প্রযুক্তি নিরাপদ করার সামর্থ্য সব দেশের সমান নয়। তাই ডিজিটাল বিশ্ব নিরাপদ রাখতে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে জাতিসংঘকে।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো নিয়মিতভাবে সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সত্যিকার উৎস শনাক্ত করা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন-‘ইন্টারনেট মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়িয়ে সারা বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনেছে। কিন্তু তার অপব্যবহার আবার ডেকে এনেছে ভয়াবহ বিপদ।’
তাই সাইবার নিরাপত্তার হুমকি মোকাবেলা করে বিশ্বকে নিরাপদ করতে জাতিসংঘকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন খাতে কিভাবে এগিয়ে গেছে সে কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু কিছু দেশ তথ্যপ্রযুক্তিকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের বিষয়ে কাজ করছে। সন্ত্রাসী ও সহিংস উগ্রবাদীরা এটিকে তাদের বিষাক্ত বক্তব্য প্রচারে ব্যবহার করছে। আইসিটি খাতে আমাদের কষ্টার্জিত সাফল্যকে নিরাপদ রাখা প্রয়োজন। কেননা, সারা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো নিয়মিতভাবে সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোকে সাইবার অপরাধের হাত থেকে বাঁচাতে জাতিসংঘকে এগিয়ে আসতে হবে। প্লেনারি সেশনে তিনি বলেন, 'আমরা সমস্যা চিহ্নিত করতে পারলেও, পুরোপুরি সমাধান করতে পারি না। আমরা অনেক সময় হ্যাকিং আটকাতে পেরেছি, কিন্তু হ্যাকারকে ধরতে পারিনি। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিংয়ের কথা তুলে ধরে, এমন সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান, এস্তোনিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পল তিসালু, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও নিরস্ত্রীকরণবিষয়ক প্রতিনিধি ইজুমি নাকামিতসু, জাপানের সাইবার নীতিবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওতাকাও, ইউএনওআইসিটির পরিচালক সালেম আভান এবং মাইক্রোসফটের সাইবার নিরাপত্তা কৌশল ও নীতি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক অ্যাঙ্গেলা ম্যাকে।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সমাপনী বক্তব্য দেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেসের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্ব নেতারা অংশ নেন।